১২৯ বছরে ভ&#

১২৯ বছরে ভালোবাসার এমসি কলেজ


১২৯ বছরে ভালোবাসার এমসি কলেজ
আশরাফ আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম
প্রকাশিত: ১৫:৫৭, ২৭ জুন ২০২১  
এমসি কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এটাই বোধহয় ছাত্রাবস্থায় শেষ লেখা। আগামীতে হয়তো এমসি কলেজে পড়ছি কথাটা বলার সুযোগ আর থাকবে না। বলতে হবে এমসি কলেজে পড়েছিলাম। পাখিদের কলকাকলি আর ঘন সবুজের ছায়াঘেরা ক্যাম্পাস, কখনো বলিনি তোমায় হৃদয়ে জমাট বাঁধা ভালো লাগার কথা। তোমার বুকে ফুটে থাকা কাঁঠালি চাপার সুঘ্রাণ নিয়ে আমি পাড়ি জমিয়েছি জীবনের কতটা পথ। 
ঘুমের ঘোরে তোমার আঁকাবাঁকা পথে আমি স্বপ্নের জাল বুনি। জীবনানন্দ দাশের মতো আবার আসিবো ফিরে তোমার সবুজ গালিচার পথ ধরে আলতো পায়ে ভালোবাসার নিঃশ্বাস নিতে। হয়তোবা মানুষ নয়, প্রজাপতির ডানা মেলে। আমি অবাক চিত্তে তাকিয়ে রই তোমার মায়াবী রূপের পানে। ভালোবাসি প্রিয়, দূর থেকে এভাবেই বলে যাবো।
২০১৬ থেকে ২১ চারটি বছরের প্রতিটা ক্ষণে সূক্ষ্ম অনুভূতির স্নিগ্ধ পরশে আগলে আছে সিলেটের নান্দনিক এই ক্যাম্পাসটি। সাংবাদিকতা করার সুবাদে নিজের অজান্তেই এখানকার শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে এমসি পরিবারের সবার সাথে চমৎকার একটা বন্ধন গড়ে উঠেছে। প্রত্যাশা প্রাপ্তি যাইহোক কলেজের স্নেহময় ভালোবাসা আজীবন কৃতজ্ঞতার চাদরে বন্দি করেই রাখবে। এই ভালোবাসা, এই প্রাপ্তির ঋণ পরিশোধ করার দুঃসাহস কখনো স্বপ্নেও যাতে না আসে। রূপসী এই ক্যাম্পাসের ১৪৪ একরের কাছে আজীবন ঋণী হয়েই থাকতে চাই। পৃথিবীতে কিছু বিষয় মানুষের হৃদয়ের কুটিরে আজীবন জায়গা করে নেয়। আমার জীবনে সেই জায়গাটা নিয়েগেছে রূপ লাবণ্যে ভরা সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজটি। 
ভালোবাসার আরেক নাম হয়ে ওঠা রূপসী এই ক্যাম্পাসটির জন্মদিন আজ৷ এখন থেকে প্রায় ১১ যুগ আগে ১৮৯২ সালের ২৭ জুন রাজা গিরিশ চন্দ্র রায় তার পিতামহ মুরারিচাঁদের নামে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। সূর্য ডুবেছে, সূর্য উঠেছে তারপর মাস পেরিয়ে বছর, পেরিয়ে যাচ্ছে যুগের পর যুগ আর এদিকে মুরারিচাঁদ কলেজের সুনাম আর পথচলাও ধাবিত হচ্ছে সামনের দিকেই।
দেশব্যাপী এমসি কলেজ নামে পরিচিত প্রতিষ্ঠানটি পূর্বে সিলেটের বন্দর বাজারের নিকট রাজা জি. সি. উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত ছিল। পরে জায়গা সংকুলান না হওয়ার দরুন পরবর্তীতে শহরের টিলাগড় ( পূর্ব নাম থ্যেকারে টিলা) নামক জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়। যার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তৎকালীন আসাম প্রদেশের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী খান বাহাদুর সৈয়দ আবদুল মজিদ সিআইই। যিনি কাপ্তান মিয়া নামে পরিচিত ছিলেন। সেই থেকে শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে চলছে এখানকার পাঠক্রম। ১৮৯১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজটিতে এফ. এ. ক্লাস খোলার অনুমতি দিলে ১৮৯২ সালের ২৭ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে মুরারিচাঁদ কলেজের যাত্রা শুরু হয়।  সেই থেকে হাঁটিহাঁটি পা পা করে কলেজটি আজ পূর্ণ করলো ঐতিহ্য আর গৌরবের ১২৯ বছর।
গুটিকয়েক শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু করা বিদ্যাপীঠটাতে বর্তমানে ১৪ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। এসব শিক্ষার্থীকে ঘিরে জ্ঞানদানে ব্রত আছেন একশোর উপর শিক্ষক। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণির শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এখানকার শিক্ষা-কার্যক্রমের সাথে জড়িয়ে আছেন। মানসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়ার ফলস্বরূপ প্রতিষ্ঠানটিকে একনাগাড়ে তিনবার অঞ্চল সেরা কলেজের স্বীকৃতি দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
সিলেটের টিলাগড় এলাকায় অবস্থিত কলেজটি দেশের সবচেয়ে সৌন্দর্য্যমণ্ডিত ক্যাম্পাস হওয়ায় বরাবরই লেখাপড়ার জন্য এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানের প্রথম সাঁড়িতেই থাকে মুরারিচাঁদের নাম।  এখানে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের এমসিয়ান কিংবা মুরারিয়ান নামে ডাকা হয়।
বিখ্যাত তামাবিল সড়কের পাশে নান্দনিক ফটক, পাশেই সদ্যনির্মিত দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, সারিবাধা বৃক্ষরাজি, কবিগুরুর ম্যুরাল, মধ্যখানে সুবিশাল জলরাশির শ্বেতপদ্মময় পুকুর, চমৎকার শহীদ মিনার, সুপ্রাচীন লাইব্রেরি, সাথে টিলার উপর দাঁড়িয়ে থাকা একাডেমিক ভবনগুলো সবুজ এই ক্যাম্পাসটির রূপ বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। ক্যাম্পাসের এই বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্যের জন্য অনেকেই এর নাম দিয়েছেন প্রাচ্যের ক্যামব্রিজ। স্বাভাবিক সময়গুলোতে বিকেল হলেই ক্যাম্পাসটিতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের আগমন চোখে পড়ে। ইট-পাথরের ব্যস্ত শহরের মাঝে এমসি কলেজ যেন শান্তির এক স্নিগ্ধ পরশ।  সিলেটের মানুষের কাছে আশির্বাদ হয়ে আছে মুরারিচাঁদ কলেজটি।
দেশের সপ্তম প্রাচীন বিদ্যাপীঠ হলেও ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে এমসি প্রশাসন। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও জাঁকজমকপূর্ণ ভাবেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের প্রস্তুতি ছিল এমসি পরিবারের। কিন্তু অদৃশ্য করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে এমসি কলেজও বন্ধ থাকার ফলে সেই শুভক্ষণটি উদযাপন করতে পারবে না এমসিয়ানরা। আজ ১২৯ বছরে পদার্পণ করল গিরিশ চন্দ্র রায়ের এমসি। শুভ জন্মদিন আলোর বাতিঘর।
লেখক : শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক, এমসি কলেজ।
ঢাকা/মাহি 

Related Keywords

Calcutta , West Bengal , India , Girishc Roy , Syed Abdul Majid , University Of Calcutta , College Ex Start , National University , City Center Mc College May , Pmc Administration , Mc College , Sometimes Das , June King Girishc Roy Her , Feast Name , Assam Province , Education Outstanding , Khan Bahadur Syed Abdul Majid , For Many , East Cambridge , City Center , Light Lighthouse , ১২৯ , கால்குட்டா , மேற்கு பெங்கல் , இந்தியா , சையத் அப்துல் மஜித் , பல்கலைக்கழகம் ஆஃப் கால்குட்டா , தேசிய பல்கலைக்கழகம் , ம்ஸீ கல்லூரி , அசாம் மாகாணம் , க்கு நிறைய , கிழக்கு கேம்பிரிட்ஜ் , நகரம் மையம் , ஒளி கலங்கரை விளக்கம் ,

© 2025 Vimarsana