বাংলাদেশ

বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি আমলাতন্ত্রের | 1047397 | কালের কণ্ঠ


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বাহারুল হক ভারতের কর্ণাটক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্ষদ পরিচালনা সম্পর্কে একটি ক্ষুদ্র বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, সেখানে রেজিস্ট্রার নিয়োগ হয় দুই বছরের জন্য, আমলা থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয় চার বছরের জন্য যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সরকার ইচ্ছা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি করতে পারে। তবে সাধারণভাবে এ বদলি হয় শাস্তিমূলক। কর্ণাটক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, কোথাও টেন্ডারবাজি নেই, দলাদলি নেই, মারামারি নেই, চাঁদাবাজি নেই।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য একটি আইন করেন, যা বিশ্ববিদ্যালয় ৭৩-এর অ্যাক্ট নামে পরিচিত। এই আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা, যার মূল দায়িত্বে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কোনো জবাবদিহি নেই। বঙ্গবন্ধু মনে করতেন যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সর্বজ্ঞানী, সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী, সেখানে জবাবদিহি থাকবে নিজের বিবেকের কাছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট, সিনেট ও ডিন সব পর্ষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের মডেল হিসেবে ধরে নিয়ে এর পরিচালনা পর্ষদ সাজানো হয়েছে। যেমন—রাষ্ট্রপতি পদাধিকারবলে আচার্য। প্রধানমন্ত্রী উপাচার্য, সংসদ সিনেট, মন্ত্রিপরিষদ সিন্ডিকেট, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রক্টর।
বিশ্ববিদ্যালয় আইনে স্বাক্ষর করার সময় বঙ্গবন্ধু অধ্যপক্ষ আব্দুর রাজ্জাককে বলেছিলেন, আপনাদের যে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হলো আপনারা কি এটা রক্ষা করতে পারবেন?
 
সেটা মূল্যায়নের সময় এসেছে, আমরা কি আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি। আমরা কি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা মুক্তবুদ্ধির চর্চাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছি। আমরা কি নিজের বিবেকের কাছে জবাবদিহি করেছি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৩ বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট কার্যকর হয় ১৯৮১ সালে। আইন চালু হওয়ার আগে বিভাগের সিনিয়র একজন শিক্ষক বিভাগীয় প্রধান থাকতেন। তিনি বিভাগের সর্বময় কর্মকর্তা, বিভাগীয় প্রধান নির্ধারণ করতেন, কার প্রমোশন হবে, কার প্রমোশন হবে না, তাঁকে হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট বলা হতো। তখন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কোনো স্বাধিকার ছিল না, স্বাধীনতা ছিল না, হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট সম্পর্ক ছিল কর্মকর্তা-কর্মচারীসুলভ। এমনও দেখা গেছে, শিক্ষকদের হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্টের বাজার পর্যন্ত করে দিতে হতো, ৭৩-এর আইন সেই অভিশাপ থেকে শিক্ষকদের মুক্তি দিয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের অধীনে চট্টগ্রামে প্রথম সিনেট কর্তৃক নির্বাচিত উপাচার্য হয়েছিলেন আব্দুল আজিজ খান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগরে আগেই এই অ্যাক্ট চালু হয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট অনুযায়ী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ নির্বাচিত উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন, ছাত্রশিবিরের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ার কারণে তত্কালীন বিএনপি সরকার ১৮৯৭-এর এক ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ উদ্দিনকে বরখাস্ত করেন। মূলত তখন থেকেই সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট কর্তৃক নির্বাচিত উপাচার্যের নিয়োগ হচ্ছে না, সরকার সরাসরি নিয়োগ দিচ্ছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে সরকার বা আমলানির্ভর হয়ে পড়ে। উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদগুলো সব তদবির এবং রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি আমলাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে হলে বা যিনি উপাচার্য হবেন তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্ষদ ও আইন সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হয় এই ধারণাগুলো আসে বিভিন্ন একাডেমিক, প্লানিং, একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট সভা, বিভিন্ন পর্ষদের দায়িত্ব, যেমন—বিভাগীয় সভাপতি, ডিন দায়িত্ব পালন করতে পারলে, তাঁর লব্ধজ্ঞান দিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেন।
বিগত দুই দশক থেকে দেখা যাচ্ছে, যাঁরা উপাচার্য হচ্ছেন তাঁদের এ ধরনের কোনো জ্ঞান ছাড়াই শুধু রাজনৈতিক তদবিরের ফলে দায়িত্ব পেয়ে যাচ্ছেন। এবং তাঁদের প্রধান দায়িত্ব হলো আমলা ও রাজনৈতিক নেতাদের খুশি রাখা। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব পড়ছে এভাবে শিক্ষকদের মধ্যে উপাচার্যকে কেন্দ্র করে একটি দল হচ্ছে, যাঁদের কাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নেওয়া। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার জন্য যেসব পর্ষদ রয়েছে, সেসব পর্ষদের উপাচার্য মহোদয় নির্বাচন দিতে চান না, কারণ যদি বিরোধী মতাবলম্বীরা চলে আসেন, আবার অনেক উপাচার্য বিভিন্ন কলাকৌশলে এসব পর্ষদে নিজস্ব শিক্ষকদের জিতিয়ে আনেন। এভাবে একজন উপাচার্য ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন, যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে বেশি, কারণ একজন প্রধানমন্ত্রী তাঁর পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করার পর তাঁর এলাকায় জনগণের কাছে জবাবদিহি করে ভোট চান। পক্ষান্তরে একজন উপাচার্য যত অপরাধ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা করুন না কেন, চার বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ইতিহাস থেকে নির্বাসিত হয়ে যান। তাঁদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ করুক না কেন, ফটো, পত্রিকা প্রকাশিত হোক না কেন, সরকার বা আমলাতন্ত্র তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না।
যে প্রতিষ্ঠানে নৈতিকতা শিখবে, দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব গড়ে তুলবে, সাংস্কৃতিক বলয় সৃষ্টি হবে, গবেষণা হবে, সময়মতো ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষা দেবে। তার পরিবর্তে শিক্ষক ও ছাত্র একটি বলয় সৃষ্টি করে, সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয় টেন্ডার ও নিজস্ব স্বার্থের জন্য ছাত্র-ছাত্র দলাদলি, কোনো কোনো উপাচার্য এর অংশীদার হয়ে যান। অনেক শিক্ষক পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েন।
কোনো কোনো বিভাগের শিক্ষকরা নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস না নিয়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসকে বেশি গুরুত্ব দেন। ফলে সৃষ্টি হয় সেশনজট। অনার্স চার বছরের কোর্স কমপক্ষে সাত বছর লাগে। যদিও সিন্ডিকেটের নিয়ম রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অতিরিক্ত দুটি ক্লাস করতে পারবেন। কিন্তু সেসব আইন মানা হয় না, বরং সেখানকার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান অথবা ডিনের দায়িত্ব পালন করেন। 
উপাচার্য-উপ-উপাচার্য দুটি পদের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপ-উপাচার্য অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনের দায়িত্ব পালন করতেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র পড়াতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাইট শিফট চালু করে ব্যাপক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছিলেন। সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে সম্ভবত আইনগতভাবে পারেনি বা নেয়নি। প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা বিরাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা স্বার্থের রাজনীতি করেন না বা কোনো পদ-পদবিতে যেতে চান না, তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে সরকার বা আমলারা এসব দুর্নীতিপরায়ণ উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা কৌশলগত কারণে নিচ্ছে না। তাঁদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হলো বঙ্গবন্ধু গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য ১৯৭৩ সালে যে আইন করেছিলেন তা শিক্ষকরা পরিপালনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন তা প্রমাণ করা। আমার ধারণা, তাঁরা শতভাগ সাফল্য লাভ করেছেন।
চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের যে আইন রয়েছে, তখনো সিনেট যাঁরা নির্বাচিত তিনজন নাম পাঠাবেন, এর মধ্য থেকে। আচার্য যেকোনো একজনকে নিয়োগ দিতে পারেন। এই নিয়োগ বাতিল করার কোনো প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইনে নেই বিধায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট করতে নির্বাচিত আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ উদ্দিনকে ১৯৯২ সালে ১৮৯৭ ব্রিটিশ আইনে নিয়োগ বাতিল করে, সেই থেকে এখন পর্যন্ত সেই ব্রিটিশ আইনে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ হচ্ছে।
বর্তমানে দেশে সরকারি বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে তার সংবিধানে দেখি সেখানে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির আদেশকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের মতামত অথবা কোনো পর্ষদের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার আইন নেই।
গণতান্ত্রিক একটি দেশ পরিচালিত হয় নির্বাচিত সরকার কর্তৃক, রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশে আমলারা সরকারের নির্দেশিত পথে দেশ পরিচালনা করেন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি দুর্বল হয় তখন আমলারা ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন, এটি সামরিক-বেসামরিক উভয় ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
 
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যখন রাজনৈতিক দল ‘প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে শক্তিশালী হওয়ার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তা ধ্বংস করা হয়। ফলে আমলারা এখন অনেক শক্তিশালী। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি দুর্নীতি করেন, ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে মিলেমিশে টেন্ডার ভাগ করেন, স্বজনপ্রীতি, অর্থ আত্মসাত্ করেন। সূত্র মতে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব উন্নয়নমূলক কাজ হবে বা হচ্ছে তার বিনিময়ে ঠিকাদার তদবির করে তাঁদের পছন্দের বা চুক্তিবদ্ধ হয়ে আমলাদের যোগসাজশে ভিসি নিয়োগে তত্পর হন।
উপাচার্যকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেওয়া হলে ও পত্রিকা প্রকাশিত হওয়ার পরও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন দপ্তর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয় না।
আগেই বলেছি, উপাচার্য নিয়োগে�

Related Keywords

Bangladesh , Amla , Khulna , United Kingdom , Baharul , Rajshahi , Abdul Aziz Khan , Jamalpur Bangamata Fazilatunnesa Nessa , Abdul Razzak , Universitya Free , Department Market , Mothera University , Chittagong Universitya Vice , University Class , Education Ministry , University Night , Public University Being Her Constitution , India Karnataka University , Karnataka University , University The Act Under Chittagong , I University , Cabinet Syndicate , Chittagong University Senate , Hisa He University , Chittagong University , University Rajshahi , Public University Senate , Ju University , University Administration , Public University , Arabic University , University Act , Parliament Senate , Professor Baharul , Board Manage , Bangladesh Independent , University Manage , Manage Board , Prime Minister , Minister Proctor , Chittagong University Act , Car Promotion , Head Ab The Department , Head Ab The Department Market , Muhammad Shiraz Ahmed , United Kingdom Act , Muhammad Shiraz Ali , Vice Chancellor Center , For The Board , Prime Minister His , Legal Law , University Act Not , Law Not , Country Manage , University The , Being Her , Vice Chancellor , Post For , Jamalpur Bangamata Fazilatunnesa Nessa Science , Arabic University Treasurer Post , Kalerkantho Com , Alerkantho , Newspaper , Ational , Olitica , Sports , Entertainment , பங்களாதேஷ் , ஆம்லா , கூழ்ந , ஒன்றுபட்டது கிஂக்டம் , பஹருல் , ராஜ்ஷாஹி , அப்துல் அஜிஸ் காந் , அப்துல் ரஜ்ஜக் , பல்கலைக்கழகம் வர்க்கம் , கல்வி அமைச்சகம் , பல்கலைக்கழகம் இரவு , கர்நாடகா பல்கலைக்கழகம் , நான் பல்கலைக்கழகம் , சிட்டகாங் பல்கலைக்கழகம் , ஜூ பல்கலைக்கழகம் , பொது பல்கலைக்கழகம் , அரபு பல்கலைக்கழகம் , பல்கலைக்கழகம் நாடகம் , பாராளுமன்றம் செனட் , நிர்வகிக்கவும் பலகை , ப்ரைம் அமைச்சர் , ஒன்றுபட்டது கிஂக்டம் நாடகம் , க்கு தி பலகை , சட்டப்பூர்வமானது சட்டம் , பல்கலைக்கழகம் தி , இருப்பது அவள் , துணை அதிபர் , போஸ்ட் க்கு , போர்ட்ஸ் ,

© 2025 Vimarsana