এবি পার্টির বাজেট আলোচনায় সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি বলেন, আজও আমাদের সমাজে নারীকে মানুষ হিসেবে না ভেবে নারী হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আমরা নারীরা শুধু বাজেটেই বঞ্চিত নয়, আমরা সর্বত্রই বঞ্চিত হচ্ছি। এবি পার্টির উদ্যোগে আজ বিকেলে বিজয়নগরস্থ এবি মিলনায়তনে, বাজেট ২০২১-২২: নারী ও শিশু প্রসঙ্গে মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়। ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মুক্ত আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী। অতিথি হিসেবে বাজেটের উপর বিশ্লেষণাত্মক বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি, এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক ও বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, শিল্পী ও অভিনেত্রী আরজুমান্দ আরা বকুল, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, অর্থনীতিবিদ আমিনুল ইসলাম এফসিএ, বিশিষ্ট শ্রমিক নেত্রী বেবি পাঠান, নারী নেত্রী রাজিয়া সুলতানা। সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি বলেন, আজও আমাদের সমাজে নারীকে মানুষ হিসেবে না ভেবে নারী হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আমরা নারীরা শুধু বাজেটেই বঞ্চিত নয় আমরা সর্বত্রই বঞ্চিত হচ্ছি। ৬ লক্ষ কোটি টাকার বাজেটে ১১ কোটি নারী ও শিশুর জন্য বরাদ্দ মাত্র ৪ হাজার কোটি টাকা। বঞ্চিতের হার কেমন সেটা আপনারাই বিবেচনা করবেন। সারাদেশে নারী শ্রমিকদের পারিশ্রমিক নিয়েও চলছে জালিয়াতি। সমাজের এই অবস্থায় এই ফ্যাসিস্ট হরিলুটের সরকারের কাছে আমরা ভালো আর কিইবা আশা করতে পারি। আমরা আশা করি এবি পার্টি মুখে যা বলছে তা বাস্তবে করে দেখাবে তারা সত্যিই নতুন এবং আইকনিক। বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেন কিন্তু কয়েকদিন আগে প্রথম আলোর পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রীরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, সবার আগে উচিত ছিলো গার্মেন্টসের নারী কর্মীদেরকে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করা। কারন আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার প্রধান অবদান আমাদের নারী কর্মীদের। বর্তমান বাজেটে নারী ও শিশু চিকিৎসা নিশ্চিত করতে দেশে দশটি মহিলা মেডিকেল কলেজ স্থাপন এবং প্রত্যেকটি জেলায় স্পেশাল নারী ও শিশু হাসপাতাল করার দাবী জানান তিনি। সরকারকে আহবান জানাই যেহেতু বাজেট সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করতে পারছেন না অতএব পদত্যাগ করুন। শিল্পী ও অভিনেত্রী আরজুমান্দ আরা বকুল বলেন, নিজে ব্যথা না পেলে মানুষ অন্যের ব্যথা সহজে অনুভব করতে পারেনা। আমাদের নারী ও শিশুরা কী ধরনের নিগ্রহের শিকার তা অন্যেরা বুঝবেনা। তিনি বলেন, একজন সাধারণ মানুষের বাজেটে কী অংশগ্রহণ আর এর বিনিময়ে রাষ্ট্র তাকে কী সেবা দিবে, এ বিষয়ে এখনো আমাদের জনগণ সচেতন নয়। আশা করি এবি পার্টি সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, নারী ও শিশুদের জন্য বাজেটে যে বরাদ্দ সেটা এই রাষ্ট্র খরচ করতে ব্যার্থ হচ্ছে। রাষ্ট্র ঋণ করে টাকা নিয়ে এসে যা খরচ করতে পারছেনা সেটা তারা দুর্নীতি করছে। এটা দুর্নীতিতে দক্ষ এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অদক্ষ ব্যর্থ একটা সরকার। আজ নাগরিক হিসেবে আমাদের এই ঋণের বোঝা নিয়ে ঘুমাতে হচ্ছে। অর্থনীতিবিদ আমিনুল ইসলাম এফসিএ বলেন, বাজেটের পরিমাণ কোনো বিবেচ্য বিষয় হতে পারে না, আলোচনার বিষয় হচ্ছে ঘোষিত বাজেটের মাধ্যমে আমরা দেশের জনগণ কতটুকু সুবিধা পাচ্ছি। যে রাষ্ট্রের সঠিক ব্যবস্থাপনা নেই তা দিয়ে জনগণ কোনো উপকার পাবেনা। বাংলাদেশের নারী ও শিশুর পরিমান মোট জনসংখ্যার প্রায় সত্তর শতাংশ অথচ আমরা তাদেরকে ভালো রাখার কোন ব্যবস্থা করতে পারছিনা। নারী ও শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যত গড়তেই আমাদের এবি পার্টির সাথে পথ চলতে হবে একসাথে। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, আনোয়ার সাদাত টুটুল, শাহ্ আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সমন্বয়ক নাজমুল হুদা অপু, দক্ষিণের আহবায়ক এএফ ওবায়দুল্লাহ মামুন, ইব্রাহিম খান সাদাত, মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিব, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিনহাজুল আবেদীন শরীফ, সাইফুল মির্জা, নাসরিন আক্তার পাখি সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এই রকম আরো খবর