আত্মমর্য

আত্মমর্যাদাবোধ মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করে


মাইমুনা আক্তার
মুমিন অহংকারী হয় না; কিন্তু এর মানে এই নয় যে সে নিজের আত্মমর্যাদাকে বিসর্জন দেয়। বরং মুমিন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন হয়। কারণ আত্মমর্যাদা মানুষকে অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখে ও নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করে। তাই রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আত্মমর্যাদা ঈমানের অংশ আর আচরণে উগ্রতা কপটতার লক্ষণ।’ (সুনানে বায়হাকি : ১০/২২)
তাই প্রতিটি মুমিন অত্মমর্যাদার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। মুমিনের আত্মমর্যাদা কেমন হবে সে বিষয়ে কোরআন-হাদিসে নির্দেশনা রয়েছে। নিম্নে সেগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো;
আত্মশুদ্ধি : লোভ, লালসা, অহংকার, ঘৃণা, হিংসা, ক্রোধ ইত্যাদি মানবীয় ত্রুটি মানুষের আত্মমর্যাদার পরিপন্থী। এগুলো মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়; বরং এগুলো মানুষকে পাপকাজে উদ্বুদ্ধ করে ও তাদের ইহকাল-পরাকল ধ্বংস করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সফল ওই ব্যক্তি, যে আত্মা পরিশুদ্ধ করল এবং ক্ষতিগ্রস্ত ওই ব্যক্তি, যে তা কলুষিত করল।’ (সুরা আশ শামস, আয়াত : ৯-১০)। তাই মুমিন সর্বদা তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ রাখার ব্যাপারে যত্নবান হবে।
লজ্জা ও শালীনতা : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘লজ্জা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৪)
লজ্জাশীলতা মানুষের ঈমান ও ব্যক্তিত্ব ধরে রাখার অন্যতম গুণ। এর বিপরীতে লজ্জাহীনতা মানুষকে ব্যক্তিত্বহীন করে তোলে। নির্লজ্জ মানুষ যেকোনো কাজ করতে পারে। যার দরুন যুগে যুগে নবীরা তাঁদের উম্মতদের লজ্জাশীলতার উপদেশ দিয়েছেন। আবু মাসউদ উকবা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, আম্বিয়ায়ে কেরামের যেসব উক্তি মানব জাতি লাভ করেছে, তার মধ্যে একটি হলো, ‘যদি তোমার লজ্জা না থাকে তাহলে তুমি যা ইচ্ছা তাই করো।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৪৮৩)
সম্মান ও সম্ভ্রম রক্ষা : নিজের ও পরিবারের সম্মান ও সম্ভ্রব রক্ষা আত্মমর্যাদাবোধ থেকেই হয়। যার প্রতি ইসলাম বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেছে।  নিজের ও পরিবারের সম্মান ও সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে কেউ নিহত হলে ইসলাম তাকে শহিদের মর্যাদা দান করেছেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষার জন্য নিহত হলো সে শহীদ, যে ব্যক্তি তার পরিবারের (সম্মান রক্ষার) জন্য নিহত সে শহীদ, যে তার দ্বিন রক্ষার জন্য নিহত হলো সে শহীদ, যে আত্মরক্ষার জন্য নিহত হলো সে শহিদ।’ (নাসায়ি, হাদিস : ৪০৯৫)
নারীর পর্দা : মানবসভ্যতার সূচনা থেকে নারীর সম্মান ও সম্ভ্রমকে তার পরিবার ও গোত্র নিজের সম্মান হিসেবে গণ্য করে। বিশেষত পুরুষের জন্য তার স্ত্রীর সম্মান ও সম্ভ্রম আত্মসম্মানের বিষয়। তাই ইসলাম নারীর সুরক্ষার জন্য পর্দার বিধান ফরজ করেছে। আল্লাহ বলেন, ‘তারা (মুমিন নারী) যেন সাধারণত প্রকাশ পায় এমন ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে।’ (সুরা নূর, আয়াত : ৩১)
দৃষ্টি সংযত করা : কুদৃষ্টি নারীকে বিব্রত ও লজ্জিত করে এবং পরিবারের পুরুষ সদস্যদের আত্মমর্যাদা তাতে আহত হয়। কুদৃষ্টি নারী-পুরুষ উভয়কে বিপদের দিকে ঠেলে দেয়। তাই ইসলামে পুরুষ ও নারী উভয়কে দৃষ্টি অবনত রাখতে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘মুমিনদের বলুন! তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থান হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য উত্তম। তারা যা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত।’ (সুরা নূর, আয়াত : ৩০)। মহান আল্লাহ সবাইকে তাদের মর্যাদা সম্পর্কে জানার ও আত্মমর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট হওয়ার তাওফিক দান করুন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
এই বিভাগের আরও খবর
সম্পাদক : নঈম নিজাম,
নির্বাহী সম্পাদক : পীর হাবিবুর রহমান । বসুন্ধরা মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ময়নাল হোসেন চৌধুরী কর্তৃক প্লট নং-৩৭১/এ, ব্লক-ডি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বারিধারা, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড প্লট নং-সি/৫২, ব্লক-কে, বসুন্ধরা, খিলক্ষেত, বাড্ডা, ঢাকা-১২২৯ ও কালিবালা দ্বিতীয় বাইপাস রোড, বগুড়া থেকে মুদ্রিত।
ফোন : পিএবিএক্স-০৯৬১২১২০০০০, ৮৪৩২৩৬১-৩, ফ্যাক্স : বার্তা-৮৪৩২৩৬৪, ফ্যাক্স : বিজ্ঞাপন-৮৪৩২৩৬৫।

Related Keywords

Abu Masud Uqba , Sahih Bukhari , , Quran Islamic , Ash Shams , Always Her , Abu Mas Ud Uqba , Quote Human , For Her , Book May , குர்ஆன் இஸ்லாமிய , க்கு அவள் , நூல் இருக்கலாம் ,

© 2025 Vimarsana