Anandabazar
ওয়াকিটকির বার্তা রেকর্ড করবে লালবাজার
শিবাজী দে সরকার
কলকাতা ০৫ জুলাই ২০২১ ০৬:২২
ফাইল চিত্র।
রাস্তায় যান-শাসনের দায়িত্বে থাকা ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীকে ওয়াকিটকিতে কে কী নির্দেশ দিচ্ছেন বা বলছেন, সব এ বার থেকে রেকর্ড করা হবে। ফলে ভুল নির্দেশ দিয়ে যান-শাসন বিপর্যস্ত করা বা নির্দেশ অমান্য করার আগে ভাববেন অফিসার এবং কর্মীরা। কারণ, এমন অভিযোগ ওঠে প্রায়ই। অথচ প্রমাণের অভাবে তা ধরা যায় না বলে জানাচ্ছে লালবাজার।
সূত্রের খবর, এ জন্য কলকাতা পুলিশের ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ড এবং দু’টি ট্র্যাফিক কন্ট্রোল রুমের ওয়াকিটকির সঙ্গে ‘ভয়েস লগার’ (মাল্টি চ্যানেল ভয়েস লগিং সরঞ্জাম) প্রযুক্তি যুক্ত করা হচ্ছে। এর ফলে ওয়াকিটকির সব কথোপকথন রেকর্ড করে রাখা যাবে। যা প্রয়োজনে শুনে নিতে পারবেন আধিকারিকেরা।
পুলিশের এক কর্তা জানান, দ্রুত এই ব্যবস্থা শহরে চালু হয়ে যাবে। এ জন্য দরপত্রের কাজ শেষ করে একটি সংস্থাকে বরাতও দেওয়া হয়েছে। তবে নিয়ন্ত্রণ-বিধি জারি থাকায় এই ব্যবস্থা চালু করতে দেরি হচ্ছে।
Advertisement
Advertisement
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, ২৫টি গার্ড এবং দু’টি ট্র্যাফিক কন্ট্রোল রুমের জন্য ওই ভয়েস লগার কিনতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। ওয়াকিটকিতে কে কী নির্দেশ দিয়েছিলেন, তার রেকর্ড থাকে না। ফলে প্রয়োজনে তা প্রমাণ করা যায় না।
কেন এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে?
কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের এক আধিকারিক জানান, ধরা যাক, মধ্য কলকাতায় রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে ডিউটি করছেন ট্র্যাফিক পুলিশের এক অফিসার। হাতে ওয়াকিটকি। যা থেকে রাস্তার যানবাহন চলাচল নিয়ে বিভিন্ন নির্দেশ আসছে। আচমকাই ওয়াকিটকিতে ভেসে এল কোনও পুলিশকর্মীর গাওয়া গান। কিন্তু জানা গেল না, ডিউটির সময়ে কে ওই কাজ করেছেন।
আবার অন্য এক পুলিশকর্তা জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই অভিযোগ ওঠে, নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট অফিসার তা মানেননি। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, কোনও নির্দেশই তিনি পাননি। এমন ক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে রেকর্ডিং শুনেই জানা যাবে সব।
লালবাজারের দাবি, এই ব্যবস্থা চালু হলে ব্যস্ত সময়ে অপ্রয়োজনীয় নির্দেশ আসা বা নির্দেশ না মানার অভিযোগ কমবে। তবে কত দিন কথোপকথনের রেকর্ডিং রাখা হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি। চলতি মাসের শেষে এই ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা চলছে।
তবে ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশের দাবি, ওয়াকিটকি নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে তাদের। কলকাতা পুলিশের ওয়াকিটকি বহু পুরনো। সেগুলির ব্যাটারির হালও খুব খারাপ। লালবাজার সূত্রের খবর, ওয়াকিটকি সিস্টেম উন্নত করার কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই শহরের সংযুক্ত এলাকায় টেট্রা (টিইটিআরএ) প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। এ জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে দাবি এক পুলিশকর্তার।
Advertisement