সমাজের অন্য দশজন মানুষের মতো সুস্থ স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছিলেন ইমান আলী (৫২)। দিনমজুরি করতেন আর সেই টাকা দিয়ে চলত ছয় সদস্যের সংসার। নিজের বাড়ি ছিল, ছিল চাষাবাদের সামান্য জমি। ইমান আলীর স্বপ্ন ছিল ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করাবেন, ভালো জায়গায় বিয়ে দেবেন। কিন্তু ইমান আলীর সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। সামান্য জ্বর থেকে তার অর্ধেক দেহ নিস্তেজ (পক্ষাঘাতগ্রস্ত) হয়ে ধীরে ধীরে কর্মক্ষমতা হারিয়ে তিনি গৃহবন্ধী হয়ে পড়েন। চিকিৎসা-ব্যয় মেটাতে গিয়ে জমিজমা সব বিক্রি করে দেন।
পক্ষাঘাতগ্রস্ত ইমান আলী একটি হুইলচেয়ারের জন্য ১০ বছর ধরে গৃহবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। প্রতিবন্ধী স্বামী, তিন মেয়ে, এক ছেলের ভরণ-পোষণ ও চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে শাফুল আক্তার ফেরি করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তরিতরকারির ব্যবসা করেন।
সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে দুর্বিষহ জীবনের কষ্টের এসব কথা শোনান হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার পূর্ব ঝুকুয়া গ্রামের পক্ষাঘাতগ্রস্ত ইমান আলীর স্ত্রী শাফুল আক্তার। ফেসবুক লাইভে এমন মানবিক আবেদন সাধারণ মানুষের হৃদয়ে আঘাত করে।
ফেসবুক লাইভে এমন মানবিক আবেদন দেখে সরেজমিনে ছুটে যান চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার পক্ষে একটি হুইলচেয়ার ইমান আলীকে উপহার দেন ও ঈদের খদ্যসামগ্রী প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুনারুঘাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিলটন চন্দ্র পাল, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাওসার বাহার, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আকবর আলী।
সোমবার (১৯ জুলাই) রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ কালের কণ্ঠকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ইমান আলীকে হুইলচেয়ার ও খাদ্যসামগ্রী উপহার দেওয়া হয়েছে। তার বাসগৃহটি দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে।
ইমান আলী বলেন, আমাকে আর ঘরে পড়ে থাকতে হবে না। আমি উঠানে বসতে পারব। বাড়ির আশপাশে ঘুরতে পারব। আমি শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি, আল্লাহ যেন ওনাকে সুস্থ রাখেন।
সাতদিনের সেরা