comparemela.com


টিভি নাটকে এসে তিনি একটা ট্রেন্ড সেট করে দিয়েছিলেন, সিনেমায়ও। সেই মোস্তফা সরয়ার ফারুকী প্রথমবার আসছেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। আগামীকাল জি-ফাইভে মুক্তি পাবে তাঁর ৮ পর্বের সিরিজ ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন’। এ উপলক্ষে দীর্ঘ এক কথোপকথনে জড়িয়েছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ফোনের এপারে ছিলেন দাউদ হোসাইন রনি-
আপনার কলটি রেকর্ড করা হচ্ছে [মুঠোফোনের স্বয়ংক্রিয় কণ্ঠ]
ওমা! এটা আবার কোন সিস্টেম!
সার্ভেইল্যান্সের যুগ। নিরাপত্তার স্বার্থে ফোন কম্পানিগুলো তাদের ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে দিচ্ছে। আপনার সিরিজের ট্রেলারে যেমন শুনতে পাই, ‘আমি কিন্তু তোমাগো মাথার ওপর সিসি ক্যামেরা হইয়া বইসা রইছি...’
...তোমরা কখন কী করো সব দেখি, সব জানি। হা হা হা।
এখান থেকেই প্রশ্ন করি। এই যুগে আমরা সবাই কিন্তু কঠোর নজরদারিতে রয়েছি, যখন-তখন অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়ে যেতে পারে। এই যে ‘সিসি ক্যামেরা’র সংলাপ, এটা দিয়ে আপনি কাকে বোঝাচ্ছেন? সরকারযন্ত্র, নাকি অন্তর্যামী ঈশ্বর?
[অট্টহাসি]...যে চরিত্রের মুখে সংলাপটা, সে চরিত্রটাকেই বুঝিয়েছি। চরিত্রটার মাধ্যমে এ সময়টাকে বোঝা যেতে পারে। কেবল বাংলাদেশ না, সারা পৃথিবীতেই সার্ভেইল্যান্স চলছে। [একটু থেমে] শোশানা জুবফ একটা বই লিখেছেন—‘দ্য এজ অব সার্ভেইল্যান্স ক্যাপিটালিজম’। এ বিষয়ে ইউটিউবে তাঁর বেশ কিছু লেকচারও আছে। তবে আমার গল্পের চরিত্রের সংলাপটা স্পেসিফিক দৃশ্যের জন্যই।
দক্ষিণ এশিয়ায় ওয়েব সিরিজ মানেই যেন থ্রিলার। ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন’-এর ট্রেলার দেখে মনে হয়েছে, এটা একটু আলাদা। বাংলাদেশের গল্প, কিন্তু প্রেজেন্টেশন ইউরোপীয় তরিকায়...
ইউরোপীয়রা মনে করে আমি বাংলাদেশের, বাংলাদেশিরা মনে করে আমি ইউরোপের। আমার ক্ষেত্রে যে সমস্যাটা হয়, চাইলেও আমি অন্যদের মতো কাজ করতে পারি না। এমনকি নিজের মতোও করতে পারি না। ধরা যাক, ‘ব্যাচেলর’ খুব পছন্দ করেছে কিছু মানুষ, পরে হাজার চাইলেও আরেকটা ‘ব্যাচেলর’ বানাতে পারিনি। আর অন্যদের মতো কাজ করতে পারাটা তো আরো মুশকিল। জাতীয় সংগীতও আমি একই সুরে দ্বিতীয়বার গাইতে পারি না। আরেকটা কথা আমি সব সময় বলি, ছবির চরিত্র আমার ভিজ্যুয়াল স্টাইল নির্ধারণ করে দেয়। ‘টেলিভিশন’ ছবির চরিত্রগুলো যতটা কালারফুল, যতটা ইমোশনাল, সেটার ইম্প্যাক্ট কিন্তু ভিজ্যুয়ালিও পড়েছে। চরিত্রই ছবির ন্যারেটিভ স্টাইল ঠিক করে দিয়েছে। আবার ‘ডুব’ ইজ সো কোয়াইট, সো সাইলেন্ট। কারণ চরিত্রগুলো খুবই ইন্ট্রোভার্ট। ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন’-এ আমি নতুন একটা চরিত্র নিয়ে ডিল করেছি। গল্প নতুন, সংকটও নতুন। সে কারণে এটার ভিজ্যুয়াল স্টাইলও নতুন।
আমরা কি ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন’কে কোনো জনরায় ফেলতে পারব?
এই প্রশ্নের উত্তর দিতে সব সময়ই আমি ব্যর্থ হই। ‘টেলিভিশন’-এর সময় বুসানের সমাপনী সংবাদ সম্মেলনে হলিউড রিপোর্টারের সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিল, ‘ছবিটা আমরা দেখেছি, পছন্দও করেছি। কিন্তু ছবিটাকে কোনো এক জনরায় ফেলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তোমার মতে এটা কোন জনরার ছবি?’ উত্তরে বললাম, আমি আসলেই জানি না। আমার প্রতিটি কাজই মিক্সড জনরার মধ্যে পড়ে।
তবে আপনি যে ছবিই বানান না কেন, সংলাপ বা দৃশ্যে কিছু শীতল হিউমার বা স্যাটায়ার থেকেই যায়...
হুম্। কিন্তু ‘ডুব’-এ নাই।
কম, তবে আছে। পর্দার চরিত্রগুলো হয়তো একেবারে দুঃখকষ্টে জর্জরিত, কিন্তু তারা এমন কিছু অ্যাক্টিভিটি করে বসে, যেটা খুবই হিউমারাস।
আমি সব সময়ই বলি, যেকোনো শিল্পীর কাজে বা কবির কবিতায় তাঁর ব্যক্তিত্ব অনূদিত হয়। শামসুর রাহমানের কবিতা তাঁর ব্যক্তিত্বের মতো, আল মাহমুদের কবিতা তাঁর মতো। আমার ছবিও আমার ব্যক্তিত্বের অনুবাদ। আমার ব্যক্তিত্বের মধ্যে অবশ্যই স্যাটায়ার, ইমোশনের নানা দিক আছে। লক্ষ করলে দেখবেন, ‘টেলিভিশন’ শুরু হয়েছে একটা স্যাটায়ার ফিল্ম হিসেবে, শেষ হয়েছে একটা ইমোশনাল ছবি হিসেবে।
থ্রিলার আর সেক্স কমেডিতে ডুবে থাকা অঞ্চলের দর্শকদের জন্য হঠাৎ ‘খিচুড়ি’ জনরা নিয়ে হাজির হয়েছেন আপনি। ওটিটির নিয়মিত দর্শকদের টানতে পারবেন তো?
আমি মনে করি, একই মানুষ বিভিন্ন রকমের খাদ্য গ্রহণ করতে পারে। কখনো বিরিয়ানি, কখনো শুধু কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাত খেতে পারে, আবার তেহারিও খেতে পারে। দর্শক টানার জন্য নির্দিষ্ট ঘরানার ফিল্মই বানাতে হবে—এটা আমি বিশ্বাস করি না।
নারী-পুরুষের সম্পর্ক, অধিকার, ইগো নিয়ে আমরা ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ দেখেছি। ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন’-এ কি আপনি এ বিষয়গুলো নতুন কোনো অ্যাঙ্গলে দেখাতে চাইছেন?
আমার ছবিতে স্ট্রং নারী চরিত্র বরাবরই থাকে। নারীবাদ বা শক্ত নারী চরিত্র নিয়ে ছবি করা এখন ফ্যাশন। এই ফ্যাশন চালু হওয়ার আগেই আমার ছবিতে দৃঢ়চেতা নারী চরিত্র এসেছে। ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’-এ তো প্রবলভাবেই ছিল। কেন আমার ছবির নারী চরিত্রগুলো দৃঢ়চেতা হয়? এর পেছনে কারণ আছে। আমার জীবনে তিনজন নারীর প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ—আমার মা, বড় বোন ও আমার স্ত্রী। আমার মায়ের মতো দৃঢ়চেতা নারী কোথাও দেখিনি। নানা তাঁকে স্কুলে পাঠাননি, তিনি মামাদের বই পড়ে পড়ে পড়ালেখা শিখে নিয়েছেন। আমার বাবা প্রায়ই ব্যবসায় ধরা খেতেন। একবার খুবই বাজেভাবে ধরা খেলেন। পরিবারের সবাই মিলে তখন এক রুমের বাসায় উঠেছি, দিনে এক বেলা ভাত খেতে শুরু করলাম আমরা। আমার মা কোনো দিন নাখালপাড়ার রাস্তা চিনতেন না, উনি যতবারই বাড়ির বাইরে যেতেন একটা গাড়িতে উঠতেন, গাড়ির জানালা তখন পর্দায় ঢেকে দেওয়া হতো, যেন উনাকে কেউ না দেখে। সেই মা কোথা থেকে যেন এনজিওর লোন নিয়ে এলেন। ১৯৮৭-৮৮ সালে যখন চারপাশের কেউ এনজিওর নামও শোনেনি, তখনকার কথা। লোনের টাকা দিয়ে বাসার ছাদে মুরগির খামার করলেন, সেই টাকা দিয়ে আমাদের পড়ালেখা করালেন। আমার মা ভীষণ প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কোনো দিন হার মানেননি। মা যখন মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে শুরু করেন তখন ঢাকা শহরে নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ ছিল। মহাখালীর গাউসুল আজম মসজিদে একদিন তিনি নামাজ পড়তে গেছেন, কিন্তু সেখানে নারীদের নামাজ পড়ার কোনো ব্যবস্থা নাই। তিনি আর্গুমেন্ট করে সেখানে নামাজ পড়েছেন। পরে অন্য নারীদের নিয়ে গিয়ে সেখানে নামাজ পড়তেন। এখন তো গাউসুল আজম মসজিদে শত শত নারী নামাজ পড়তে যায়।
আমার বড় বোন ক্লাস সেভেন-এইটে স্কুল থেকে ফিরে ছোট ভাই-বোনদের কোলে নিয়ে রান্নাবান্না করতে বসে যেতেন, কারণ মা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আমার স্ত্রী, ক্লাস নাইনে পড়ার সময় বাবাকে হারিয়েছে। একা নিজের ক্যারিয়ার গড়েছে, পরিবার চালিয়েছে। এ রকম অনেক স্ট্রং নারী চরিত্র আমি দেখেছি। আমি দেখেছি, আমাদের পিতৃতান্ত্রিক সমাজ দৃঢ়চেতা নারীদের কী পরিমাণ ভয় পায়। তো, এই নারীরা আমার ছবিতে এসেছে বিভিন্নভাবে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন’-এর মেয়েটা কি ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’-এর মেয়েটা? একদমই না। তার সমস্যা আলাদা, তার চ্যালেঞ্জ আলাদা। আরেকটা কথা, নারী ইস্যু নিয়ে ছবি বানালে অনেকে ভাবেন, এটা কি এনজিওর ছবি নাকি! ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন’ সিরিজকে নারীবাদী ব্র্যাকেটে ফেলার উপায়ও নেই। এখানে কোনো সাদাকালো চরিত্র নাই, অনেক গ্রে এরিয়া আছে। যে কারণে আমরা এটাকে নারীবাদী ছবি বলছি না কোথাও।
যতটা জেনেছি তাতে মনে হয়েছে, ব্যক্তিজীবনে আপনি হয়তো সুফিজমের চর্চা করেন...
অফ কোর্স।
নারীবাদ প্রসঙ্গ যখন এলোই, এ প্রসঙ্গে আরেকটা সম্পূরক প্রশ্ন করতে চাই। অনেকের ধারণা, কেবল নারীরাই নারীবাদী হন। আসলে কিন্তু পুরুষরাও নারীবাদী হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনার মত কী? বা নারীবাদী হওয়াটা কি দূষণীয়?
অবশ্যই পুরুষরা নারীবাদী হতে পারেন। আমি মনুষ্যবাদী হলেই নারীবাদসহ সকল বাদই এর মধ্যে চলে আসে। আমি সহজ-সরল জিনিসে বিশ্বাস করি, পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীর লিঙ্গ, বয়স, ধর্ম নির্বিশেষে তার ডিগনিটি রক্ষা করে স্বাধীনভাবে বাঁচবার অধিকার আছে। আবার এটাও জানি, এ পৃথিবীর সিস্টেম সেটা হতে দেয় না। হতে না দিলেই তখন লড়াই-সংগ্রামের প্রশ্ন আসে। এই অধিকারের জায়গায় নারীবাদও আছে, এনিম্যাল রাইটস, মাইনরিটি রাইটসও আছে। বাংলাদেশে যেমন হিন্দু রাইটস, আবার ভারতে মুসলিম রাইটস।
আলোচনা ভারী হয়ে উঠছে। আমরা এখান থেকে বের হই। টিভি ফিকশন নির্মাণে এসে আপনি একটা ট্রেন্ড সেট করেছিলেন, ফিল্মে আসার পরও তা-ই হলো। এবার আপনি আসছেন ওয়েবে। ওয়েবে নামার আগে কি সচেতনভাবেই ভেবেছিলেন, ‘আমাকে এমন একটা কিছু করতে হবে, যাতে মনে হবে, আই অ্যাম দ্য বস?’
নাহ্। আমার আশপাশে যারা থাকে তারা জানে, আমি সব সময় শিশুর মতো আনন্দে থাকি। আমি যখন কাজ করি তখন বাচ্চাদের মতো কাদামাটি ডানে টিপি বাঁয়ে টিপি। কখনো এটা ঘোড়া হয়, কখনো আবার হাতির দিকে চলে যায়। এই মুহূর্তে আমি কালার গ্রেডিং করতে করতেই কথা বলছি। শিশুর আনন্দে খেলছি, একেবার ডানে যাই আবার বাঁয়ে যাই, কাজটা নিয়েই অবসেসড থাকি। এটা কোনো ট্রেন্ড সেট করবে কি না বা কাল্ট হবে কি না, আমার মনে হয় না কোনো শিল্পীই এসব ভেবে কাজ করতে পারেন। তা ছাড়া নতুন ধারা এভাবে বলেকয়ে হয়ও না।
করোনা মহামারি আসার পর ওটিটির উত্থান হলো, আগে থেকেই ছিল, এখন আরো প্রসারিত হয়েছে। পাশাপাশি এই মাধ্যমের একটা ব্যাকরণও তৈরি হয়েছে। সিরিজের প্রথম পর্বের শেষে একটা ক্লিপ হ্যাঙ্গার থাকবে, পরের পর্বে যেন দর্শকের আগ্রহটা থাকে। এ ক্ষেত্রে আপনি কী করেছেন? অন্যদের দেখানো ব্যাকরণ মানছেন, নাকি নিজেই ব্যাকরণ তৈরি করে নিয়েছেন?
সিনেমার যে ল্যাঙ্গুয়েজ সেখানে আমার সিগনেচার তো থাকবেই। আর ওয়েব সিরিজে তো এপিসোডিক গল্প। এখানে একটা কনস্ট্রাকশন মাথায় রাখতে হয়, ইভেন্টগুলোর ডিস্ট্রিবিউশন কিভাবে করতে হবে। ধীরে ধীরে কিভাবে এটা পিনাকলের দিকে যাবে। ইট উইল স্টার্ট স্লোলি অ্যান্ড ইট উইল কিপ রাইজিং রাইজিং অ্যান্ড রাইজিং। প্রতিটা পর্বে একটা প্রশ্ন রেখে পরের পর্বে ঢুকতে হবে। এটা খুবই বেসিক বিষয় এপিসোডিক গল্পের বেলায়। ওয়েব আসারও অনেক আগে আমরা যখন আরব্য রজনীর গল্প দেখতাম, সেখানেও কিন্তু বিষয়গুলো ছিল। এপিসোডিক গল্পের ক্ষেত্রে এ বিষয়টা মাথায় রাখতেই হয়। আমাদের এই অঞ্চলে ওয়েব সিরিজ মানেই ডার্ক থ্রিলার, মার্ডার দেখাতে হবে। সবে ওয়েবের জোয়ার শুরু হয়েছে তো, তাই এ রকম। কেউ কেউ ভাবতে পারেন ওয়েব সিরিজ মানেই তো থ্রিলার। আমার মনে হয় আস্তে আস্তে এটা কেটে যাবে। নেটফ্লিক্সের হিট সিরিয়াল ‘বেটার কল সাউল’, এ রকম আরো অনেক সিরিজ আছে, যেগুলোর সঙ্গে থ্রিলারের কোনো সম্পর্কই নেই।
আপনার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আফজাল হোসেনের প্রযোজনায় টিভি ফিকশন ‘ভোকাট্টা’ করেছিলেন...
হ্যাঁ, আমার তৃতীয় ফিকশন ছিল সেটা। দীর্ঘদিন তিনি নাটকটা প্রচার করতে পারেননি, কারণ বিটিভিতে প্যাকেজ নাটক চালানো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে যখন প্রচারের সুযোগ পেলেন তখন আমি থামালাম। বললাম, আফজাল ভাই, আমি তো এখন অনেক বদলে গেছি, আপনি আর এই নাটক চালায়েন না। বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে চালাব না। আরো ৮-১০ বছর পর নাটকটির সঙ্গে জড়িত আরেকজন বললেন, চাংক পাওয়া গেছে, চালাব? বললাম, চালায়ে দেন, সকালের দিকে চালান, যাতে কেউ দেখতে না পায়...হা হা হা। এই কিছুদিন আগে সেটা প্রচারিত হয়েছে।
তো, এত দিন পর আপনার মুড চেঞ্জ হলো কেন?
চিন্তা করলাম, এতগুলো বছর নাটকটা প্রচার করেনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে, এই ভালোবাসা আর কোথায় পাব! তাই বললাম, চালায়ে দেন।
‘ভোকাট্টা’র দুই দশক পর আফজাল হোসেনকে নিলেন এই সিরিজে! অলওয়েজ ক্লিন শেভড একজন স্টাইলিশম্যানকে আপনি যেভাবে পর্দায় আনলেন! ট্রেলারে যা দেখলাম—তিনি কবি, দাড়ি আছে, চুল বড়, ভুঁড়িও বেড়েছে। উনার চিরাচরিত অভিনয়ের প্যাটার্নও এখানে নেই। এই আফজাল হোসেনকে দেখে অভ্যস্ত নয় দর্শক...
চরিত্রের জন্য আমরা যে শুধু আফজাল ভাইয়ের গেটআপেই বদল এনেছি তা নয়, উনি এখানে এত ন্যাচারাল এবং সাবলীল অভিনয় করেছেন, তাঁর আগের দর্শকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতাই হবে।
আপনার হাত ধরেই অভিনয়ে এসেছিলেন হাসান মাসুদ, মাঝখানে তাঁকে অভিনয়ে সেভাবে পাওয়া যায়নি। ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন’-এ তাঁকেও পাওয়া গেল। এটা কি চরিত্রের ডিমান্ড ছিল, নাকি তাঁকে আবার অভিনয়ে ফেরাতে চেয়েছেন?
না না। আমরা তো আর হাসান মাসুদকে অভিনয়ে ফেরানোর জন্য চরিত্র লিখিনি। লেখার পর এই চরিত্রে আমি অনেকের কথাই ভেবেছি। অনেকের সঙ্গে কথাও হয়েছে, ফাইনালি হাসান মাসুদকেই লক করলাম। শুটিংয়ে গিয়ে বুঝতে পারলাম, দ্যাট ওয়াজ বেস্ট ডিসিশন অ্যান্ড হি উইল রক এগেইন।
ফারিণকে নিয়ে এত দিনে অনেক কথাই বলেছেন। ট্রেলারে, গানে তাঁকে দেখে মনে হয়েছে, ৮-১০ বছর আগের নুসরাত ইমরোজ তিশাকেই যেন দেখছি...
আই ডোন্ট নো...[হাসি]
বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, এক্সপ্রেশন, টোনাল কোয়ালিটিতে মিল পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু...
ন্যাচারাল অভিনয়ের দিক থেকে হয়তো মিল পাচ্ছেন। আমাদের দেশে যাঁরা অভিনয় করেন তাঁদের মধ্যে তিশার অভিনয় মোস্ট ন্যাচারাল। অনেক ভালো অভিনেত্রী আছেন দেশে, একেকজন একেক দিকে এক্সপার্ট। ন্যাচারাল ও ইন্টারনাল অভিনয়ের ক্ষেত্রে তিশা আনপ্যারালাল। ‘ডুব’ আর ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ দেখলেই বোঝা যায় তাঁর অভিনয়দক্ষতা। ফারিণ এই সিরিজে এক্সট্রিমলি ইন্টারনাল অভিনয় করেছে। সে খুবই ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে, সেটার রিফ্লেকশন পর্দায় ফুটে উঠেছে।
আর চঞ্চল চৌধুরী? প্রচারণার ধরন দেখে মনেই হচ্ছে তিনি এখানে অতিথি...
হা হা হা। সিরিজটা দেখলেই বোঝা যাবে।
কালকে প্রথম প্রহরেই তো বিষয়টা সবাই জেনে যাবে। এক দিন আগে বললে কী এমন ক্ষতি?
প্রথম আওয়ারে বোঝা যাবে কি না আমি নিশ্চিত নই। বুঝতে একটু সময়ও লাগতে পারে।
রাশিয়ার বংশোদ্ভূত মার্কিন সিনেমাটোগ্রাফার অ্যালেক্সি কসোরুকভ ‘নো ল্যান্ডসম্যান’-এর পর ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন’-এও আছেন। এই কভিড পরিস্থিতিতে বিদেশি একজনকে দেশে এনে শুটিং করানো তো বেশ ঝামেলাপূর্ণ। নাকি তাঁকে ছাড়া হতোই না সিরিজটা?
তাঁকে ছাড়া হতোই না, এটা বলা যাবে না। কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য, যেমন এখন এই সিরিজ দেখলে মনে হচ্ছে, ফারিণকে ছাড়া সিরিজটা ইমপসিবল ছিল। ফারিণকে এই চরিত্র থেকে আলাদাই করা যাবে না। অথচ ফারিণের সঙ্গে দেখা না হলে তো অন্য কাউকে নিয়েই করতাম, তখন তাকে নিয়েই সেই আবেদন তৈরি হতো। সিনেমাটোগ্রাফির ক্ষেত্রেও তা-ই। সিরিজটা যেভাবে করতে চেয়েছি মনে হয়েছে, অ্যালেক্সি কাজটা ভালো পারবে। যে কারণে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে ম্যালা ঝামেলা পোহানোর পর তাঁকে পেয়েছি।
পরিচালনা-চিত্রনাট্য তৈরির বাইরে আপনার কবিতা লেখার গুণের কথা জানি, এই সিরিজের বিহাইন্ড দ্য সিন ভিডিওতে আপনার নৃত্যকলা দেখলাম। দুই দিন পর আবার জানলাম আপনার গীতিকার পরিচয়ের কথা। এসব নিয়ে তো বলবেনই, তার আগে বলুন সামনে আপনাকে অভিনেতা বা গায়ক পরিচয়ে কবে পাব?
গায়ক হিসেবে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। আমার গান আমার বউ ছাড়া কেউই সহ্য করবে না, কারণ আমি এতই বেসুরো। আর অভিনয়ের ক্ষেত্রে মনে হয় না আমি পারব।
কেন? আপনি শিল্পীদের এত দিন ধরে যেভাবে অভিনয়টা দেখিয়ে দেন সেভাবেই করবেন। আপনার ভাই-বেরাদরদের প্রায় সবাই অভিনয় করেছে, সরাফ আহমেদ জীবন তো এই সময়ে এসে হিট হয়ে গেল।
সহকারীদের আমি সব সময় অভিনয় করতে বলি, কারণ অভিনয় করলে ফিল্মমেকিংয়ের অনেক জিনিস বুঝতে পারবে। কিভাবে অনিয়শিল্পীদের ডিল করতে হয় সেটাও জেনে যাবে।
তো, এই থিওরি নিজের ওপর অ্যাপ্লাই করেন না কেন?
হে হে হে। কেন যে অ্যাপ্লাই করি না! আমার আসলে রাশ অব ব্লাড হয়, প্রেসার বেড়ে যায়। এ কারণে করতে পারি না।
নৃত্যকলা প্রদর্শনের বিষয়টা...?
শুটিংয়ে আমরা অনেক ফান করি। শুটিং শেষ হয়ে গেলে আমরা রিল্যাক্স মুডে চলে যাই। তখন অ্যালেক্সি বলল, লেটস ডান্স। সেটা যে রেকর্ড হচ্ছে এটা তখন জানতাম না।
আর গান লেখা? যেহেতু কবিতা লেখেন, গান তো লিখতে পারারই কথা। কিন্তু এত দেরিতে এসে গীতিকবির খাতায় নাম লেখালেন...
আসলে এবারও আমার গান লেখা হতো না। সাধারণত গীতিকারদের ডেকে এনে ব্রিফ করি কী ধরনের শব্দ বা ইমেজ চাই গানে, এভাবেই অভ্যস্ত। এবার চেয়েছিলাম গানটা কোনো মেয়ে গীতিকার লিখুক। তার আগে আমাকে তো সুর লক করতে হবে। এদিকে পাভেল আরিনকে নিয়ে আমি একের পর এক সুর করি, দুদিন পর সেই সুর আর পছন্দ হচ্ছে না। চারটা সুর বাতিল করার পর যেদিন ফাইনালি সুরটা মনে ধরল, সেদিন ভাবলাম কাউকে দেব সুরের ওপর লিখে দিতে। তখন স্টুডিওতে এলো মাশা ইসলাম। ওকে বললাম, তুমি এই সুরটার ওপর একটু হামিং করো। ও হামিং করছিল, আমি মোবাইলে বহু কষ্টে এক লাইন লিখলাম। এরপর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম, ঘুম থেকে উঠে আবার আরেক লাইন লিখলাম। এভাবেই হলো গানটা।
অতীতেও আপনার সিনেমায় অনেক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। কিন্তু ছবিতে পুরো গান কখনোই রাখেন না। সিরিজে কি পুরো গান পাব?
হ্যাঁ।
২০১৭ সালে ‘ডুব’ রিলিজের পর ‘শনিবার বিকেল’ করলেন, সেটা আটকে আছে। ‘নো ল্যান্ডসম্যান’-এর কাজও এখনো শেষ হয়নি। চার বছর ধরে আপনি কাজ করে চলছেন, কিন্তু দর্শকের সামনে আসতে পারছেন না। হতাশা কাজ করে না আপনার ভেতরে?
অফ কোর্স করে। আমি আমার কাজ দর্শককে দেখাতে পারছি না, এ নিয়ে তীব্র হতাশা কাজ করে। নিয়মিত কাজ করছি, তবু দর্শকের কাছে যেতে পারছি না, এর চেয়ে যন্ত্রণার, এর চেয়ে বেদনার কিছু একজন ফিল্মমেকারের জীবনে আর আছে বলে আমি মনে করি না। আমি আমার দর্শককে মিস করি। আমি চাই দর্শক আমার কাজ নিয়ে কথা বলুক, ভালো-মন্দ সমালোচনা করুক। এই যে আমি মানুষের কাছে যেতে পারছি না, এটা যে আমাকে কী পরিমাণ যন্ত্রণা দেয়, এটা আমার বউ ছাড়া আর কেউ জানে না। রাতের পর রাত আমি ঘুমাতে পারতাম না।
ওয়েব প্ল্যাটফর্মে আমাকে আরো বেশি পাওয়া যাবে, এ কথা বিভিন্ন জায়গায় বলছি এই যন্ত্রণা থেকেই। ওয়েবে একটা মজা আছে, ওভেন থেকে খাবার বের করেই গরম গরম খাওয়ানো যাচ্ছে। সেন্সরের জন্য দৌড়াতে হচ্ছে না, ফেস্টিভালে ফেস্টিভালে ঘুরতে হচ্ছে না, প্রেসের সামনে ইন্টারভিউ দিতে হচ্ছে না।
বাইরের দেশের মিডিয়া আপনাকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্মাতার স্বীকৃতি দিয়েছে বারবার। আপনি চাইলেই কিন্তু নেটফ্লিক্স বা অ্যামাজন প্রাইমে ‘শনিবার বিকেল’ দিতে পারেন। সেন্সর বা যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটীয় ভাষায় ‘ওভার দ্য টপ’ শট খেলাটাই তো ওটিটির আসল মানে।
পারি। কিন্তু কিছু বিষয় আছে, যেগুলো এখানে বলা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশের দুটি ওয়েব সিরিজ খুব আলোড়ন তুলল দেশে ও ভারতে—‘তাকদীর’ ও ‘মহানগর’। এর মধ্যে আপনার কাছে কোনটা বেশি ভালো লেগেছে?
ডিফিকাল্ট টু কম্পেয়ার। কারণ দুইটা দুই রকম। টোনাল কোয়ালিটিও আলাদা। গোলাপ ও গন্ধরাজের মধ্যে কোনটা সেরা এটা বলা যেমন মুশকিল, ‘তাকদীর’ ও ‘মহানগর’-এর মধ্যে কোনটা বেশি ভালো সেটা বলাও মুশকিল।
গোলাপের বাণিজ্যিক মূল্য একটু বেশি মনে হয়।
হতে পারে। তবু আমার জন্য বলাটা মুশকিল। আশফাক নিপুণ আমার ভাই-বেরাদর হলেও সৈয়দ আহমেদ শাওকীকেও আমার ভাই মনে করি। তবে তুলনা করতে পারছি না মূলত টোনাল কোয়ালিটির কারণে।
আপনাদের পরবর্তী জেনারেশন যেভাবে কাজ করছে, এতে কি হ্যাপি হওয়ার সুযোগ আছে?
আমি দীর্ঘদিন হতাশার মধ্যে ছিলাম। আমরা যেভাবে টেলিভিশনে কাজ করেছিলাম, কাল্ট কাজ উপহার দিয়েছিলাম—কেবল কোয়ালিটি নয়, জনপ্রিয়তার দিক দিয়েও। দুর্দান্ত সব কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম আমরা। কেবল আমি নই, আমার পরে আরো অনেক ফিল্মমেকার এসেছে, তাদের মিলিয়েই বলছি। এই নির্মাতারা সিনেমায় আসছে কম, এলেও ফর্মুলা ছবি বানাচ্ছে বেশি। সাধারণত ভবিষ্যতের ফিল্মমেকাররা অতীতের ফিল্মমেকারদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকে। কাহলিল জিবরান কবিতায় বলেছেন, ভবিষ্যতের ছেলেরা তীরের মতো, ধনুকের চেয়ে দূরেই চলে যায় তারা। কিন্তু সেটা না হয়ে তীরটা ফিরে আসছে ধনুকের দিকে। এখন তো আমাদের টেলিভিশন অনেক পিছিয়ে গেছে। টিভি ইন্ডাস্ট্রি এখন ইউটিউব ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। এখানকার টিভি চ্যানেলও এখন ইউটিউবের দিকে তাকিয়ে থাকে। এমন যখন পরিস্থিতি বুঝতে হবে কোথাও একটা গণ্ডগোল হয়েছে, ফোকাসে গোলমাল হয়েছে। আমাদের মিডিয়াও ভুল জিনিসকে ফোকাস করছে। এত হতাশার মধ্যে ওটিটি আশার আলো নিয়ে এসেছে।
ওটিটির বাংলা কনটেন্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি কনটেন্টকে এগিয়ে রাখছে কলকাতার দর্শকরাই। তাদের মতে মেকিং, অভিনয়, গল্প বলার ক্ষেত্রে আমাদের নির্মাতারা অনেক বেশি জীবনঘনিষ্ঠ...
এটা অবশ্যই আশা-জাগানিয়া। তবে এটা কিন্তু নতুন না, ১০-১২ বছর ধরেই ধীরে ধীরে ওখানে আমাদের কাজের দর্শক বেড়েছে।
সিনেমা হলের বিকল্প ওটিটি হতে পারে কি না? বহুল চর্চিত প্রশ্ন, কভিড বাস্তবতা মাথায় রেখে উত্তর দেবেন।
কোনোটার বিকল্পই কোনোটা হতে পারে না। সিনেমা হল সিনেমা হলের জায়গাতেই থাকবে। তবে হ্যাঁ, ফিল্ম বা সিরিজ কনজাম্পশনের মাধ্যম বদলাচ্ছে। আরো বদলাবে। মানুষ এখন দিনের বেশির ভাগ সময় ডিভাইসের দিকে তাকিয়ে থাকে। মানুষ এখন কতক্ষণ সময় মোবাইল, ল্যাপটপ, আকাশ বা মানুষের দিকে তাকায় এটার জরিপ করলেই উত্তর পাওয়া যাবে। মানুষের চোখ যেখানে আছে সেখানেই কনটেন্ট চলে আসছে। এখন তো টেলিভিশনও স্মার্ট হয়ে গেছে। বোঝাই যাচ্ছে মানুষ এখন ওটিটিতেই ফিল্ম বা সিরিজ দেখছে। কভিড বা যে কারণেই হোক টিকিট কেটে সিনেমা দেখার চেয়ে সুবিধাজনক ডিভাইসেই সে কনটেন্ট দেখতে চাইবে।
কিন্তু বিশ্বের চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে ওটিটির ফিল্ম প্রতিযোগিতা করার সুযোগ পাওয়া উচিত কি না, এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে অনেক দিন ধরে, এখনো চলছেই।
সুযোগ পাচ্ছে তো। একমাত্র কান ছাড়া বাকি সব উৎসবেই ওটিটির মানসম্পন্ন ছবি প্রতিযোগিতা করছে। নিকট ভবিষ্যতে হয়তো কানও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। আমরা যারা ইনডিপেনডেন্ট ফিল্মমেকার তাদের জন্য ওটিটির বিকল্প এই মুহূর্তে নেই। আমি যদি এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা—এই চার মহাদেশের হলে ছবি মুক্তি দিতে চাই, কয়েক বছর লেগে যাবে। আর ওটিটিতে এক দিনেই মুক্তি দিতে পারি। এই যেমন ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলমেন’ আগামীকাল একই দিনে আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের ১৯০টি দেশে মুক্তি পাচ্ছে। ওটিটি না থাকলে ইনডিপেনডেন্ট ফিল্মমেকারদের জন্য এটা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার ছিল।
সব শেষ প্রশ্ন, আপনার প্রথম ইংরেজি ছবি ‘নো ল্যান্ডসম্যান’ এখন কোন অবস্থায় আছে?
আবার ফ্লাইট চালু হলে ভারতে যাব, এডিট এক ধরনের হয়েছে, এবার যাব মিউজিক করতে। তারপর শুভক্ষণে কোথাও মুক্তি দেব, সেটা কোথায় এখনো তা জানি না।
এই রকম আরো খবর

Related Keywords

Australia ,Bangladesh ,United States ,India ,Hollywood ,California ,Calcutta ,West Bengal ,Russia ,Jakarta ,Jakarta Raya ,Indonesia ,Bangladeshis ,Asabur Rahman ,Hassan Masud ,Sarwar Farooqi ,Ir Hassan Masood ,Syed Ahmed ,Masha Islam ,I Gausul Azam ,R Chanchal Chowdhury ,Afzal Hussein ,David Hussain ,Al Mahmud ,Mohakhali Gausul Azam ,Youtube ,Wireless Sarwar Farooqi ,Youtube His ,South Asia ,May Thriller ,Columbus European ,Style New ,Person Singular ,Gausul Azam ,Gray Area ,Animal Rights ,Hindu Rights ,India Muslim Rights ,Will Start ,Will Kip Rising ,Dark Thriller ,Always Clean ,For New ,Smack Waz Best Decision ,Nusrat Siddique May ,Most Natural ,Available His ,Behind The Scene ,Let Dance ,Name There ,For Run Being ,Festival ,Amazon Saturday ,Building Report ,Content View ,ஆஸ்திரேலியா ,பங்களாதேஷ் ,ஒன்றுபட்டது மாநிலங்களில் ,இந்தியா ,ஹாலிவுட் ,கலிஃபோர்னியா ,கால்குட்டா ,மேற்கு பெங்கல் ,ரஷ்யா ,ஜகார்த்தா ,ஜகார்த்தா ராய ,இந்தோனேசியா ,சபூர் ரஹ்மான் ,சர்வார் ஃபெரூகீ ,ம்யாஶ இஸ்லாம் ,டேவிட் ஹுசைன் ,அல் மஹ்மூத் ,வலைஒளி ,வலைஒளி அவரது ,தெற்கு ஆசியா ,நபர் ஒருமை ,கௌசூழ் அஸாம் ,சாம்பல் பரப்பளவு ,விலங்கு உரிமைகள் ,இந்து உரிமைகள் ,விருப்பம் தொடங்கு ,எப்போதும் சுத்தமான ,க்கு புதியது ,பின்னால் தி காட்சி ,திருவிழா ,அமேசான் சனிக்கிழமை ,கட்டிடம் அறிக்கை ,

© 2025 Vimarsana

comparemela.com © 2020. All Rights Reserved.