চাঁদপুরের শাহরাস্তির পাচঁ বছরের শিশু খাদিজা আক্তারের খোঁজ মিলছে না গত আড়াই মাসেও। এতে একমাত্র সন্তান নিখোঁজ থাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে পরিবারের সদস্যদের। পরিবারের অভিযোগ, মাত্র ৫০ হাজার টাকা ধার না পেয়ে শিশু খাদিজা আক্তারকে অপহরণ করেছে এলাকার রবিউল আলম ও ফরহাদ হোসেন নামে দুই যুবক।
নিখোঁজ সন্তানকে ফিরে পেতে গতকাল শনিবার দুপুরে চাঁদপুর প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হন খাদিজা আক্তারের মা ফাতেমা বেগম। সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চান তিনি। এ সময় তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে শিশুটির মা বলেন, ৫০ হাজার টাকা ধার না পেয়ে এলাকার রবিউল ও ফরহাদ নামে দুই যুবক গত ১১ এপ্রিল তার সন্তানকে অপহরণ করেছে। এ নিয়ে থানায় মামলা করেও প্রকৃত আসামিদের মুখ খুলতে পারছে না পুলিশ। তাই একমাত্র সন্তানকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চান তিনি।
শুধু তা-ই নয়, যেকোনো ব্যক্তি শিশুটির সন্ধান দিতে পারলে তাকে নগদ দুই লাখ টাকা আর্থিক পুরস্কারও ঘোষণা করেন ফাতেমা বেগম। এ সময় স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী ছাড়াও শিশু খাদিজা আক্তারের দাদা শাহজাহান কবির ও আইনজীবী জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
শাহরাস্তি উপজেলার ছোট তুলা গ্রামের শিশু খাদিজা আক্তারকে অপহরণ করা হয়েছে। এ নিয়ে তার মা ফাতেমা বেগম বিগত ১১ এপ্রিল শাহরাস্তি থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরে ৭ মে পুলিশ রবিউল আলম (২৫) ও ফরহাদ হোসেন নামে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে। তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। রিমান্ডে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আরো চারজন যথাক্রমে সারোয়ার হোসেন, হিমাংশু দাস, একরামুল হক এবং হালিমা বেগমের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। পরে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে সুমন কবিরাজ নামে আরেকজন পলাতক রয়েছেন, যার কাছে শিশু খাদিজা আক্তার রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এখনো অধরা সেই সুমন কবিরাজ।
মামলার বাদীর দাবি, এই সুমন কবিরাজকে গ্রেপ্তার করতে পারলেই তার সন্তানের খোঁজ মিলবে। অভিযোগ রয়েছে, এর আগেও এলাকায় শিশু অপহরণ করে জিম্মি রেখে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছেন রবিউল ও ফরহাদ। আর তারাই শিশুটিকে সুমন কবিরাজের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।
এদিকে শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ জানান, শিশু খাদিজা আক্তার অপহরণ কিংবা নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে প্রকৃত কারণ বের করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ড এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার পরও তারা কেউ-ই মুখ খুলছেন না। এমন পরিস্থিতিতে শিশুটিকে যেকোনো অবস্থায় পেতে পুলিশ হাল ছেড়ে দেয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাঁচ বছরের শিশু খাদিজা আক্তারকে নিয়ে ফাতেমা বেগম শাহরাস্তির গ্রামের বাড়িতে বসবাস করতেন। তার স্বামী সাব্বির হোসেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে চাকরি করেন।
এই রকম আরো খবর