The greatest enemy of knowledge is not ignorance, it is the illusion of knowledge. – স্টিফেন হকিং
এই একটি বাক্যের মধ্যেই এমন অনেক কিছু ফুটে উঠে যা এই বিশ্বায়ন এবং মিডিয়ার যুগে খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বায়নের কারণে প্রতিটি দেশ যেমন পরস্পরের সাথে জড়িয়ে পড়ছে, তেমনি মহাশক্তিগুলোর দৌর্দণ্ড প্রতাপে মাফিয়া বা গ্যাং সন্ত্রাসের বদলে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের জন্ম হচ্ছে। এই সন্ত্রাস এত সুন্দর মুখোশ পরে থাকে যে আমরা তার নগ্ন সম্রাজ্যবাদী এবং ফ্যাসিবাদী রূপটা দেখতে পাই না। মুখোশের আড়ালে থেকে এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস অত্যাধুনিক যুগের অভিনব “টেররিজম” তৈরী করে এবং নিজের স্বার্থে সেই টেররিজমকেই লালন করে। এসব অপকর্মে তাদের প্রধান সহকারী হয় মিডিয়া। আধুনিক পুলিশী রাষ্ট্রের সবচেয়ে কার্যকরী হাতিয়ার হচ্ছে মিডিয়া।
“অকুপেশন ১০১” (Occupation 101) প্রামান্য চিত্রটি শুরু হয়েছে স্টিফেন হকিং এর এই উক্তি দিয়ে। ডকুমেন্টারির বিষয় ইসরায়েলের অবৈধ আগ্রাসন এবং ফিলিস্তিন অধিকার। ডক্যুটা দেখার পর জীবনের অধিকাংশ কাজকেই একেবারে অর্থহীন মনে হচ্ছে।
এখান থেকে রেচেল কোরি নামের এক মার্কিন ছাত্রীর কথা জানলাম যে ফিলিস্তিনে গিয়েছিল তাদের দুর্দশার ভাগীদার হতে, ইসরায়েলের আগ্রাসন মার্কিনীদের সামনে তুলে ধরতে। কিন্তু মাত্র ২৩ বছর বয়সে ইসরায়েলী সৈন্যদের হাতে তাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়। সে কোন ওয়ার জোনে থাকতো না, সাধারণ ফিলিস্তিনী শরণার্থী শিবিরই ছিল তার আবাসস্থল। মৃত্যু ফ্রন্টিয়ার ছেড়ে ফিলিস্তিনের কত গভীরে প্রবেশ করেছে তা মার্কিনীরা এতে কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছে। রেচেল কোরি নিয়মিত মা-বাবাকে মেইল করে তার অভিজ্ঞতার কথা জানাতো। এমনই একটি মেইলের শেষ লাইন ছিল:
I think it is a good idea for us all to drop everything and devote our lives to making this stop.
অকুপেশন ১০১ দেখার পর ঠিক এ কাজটাই করতে ইচ্ছে করে যদিও একটু পরেই নিজের সীমাবদ্ধতাটা বুঝতে পারি। তৃতীয় বিশ্বের এক কোণায় বসে এই আমার পক্ষে কতটুকুই বা করা সম্ভব। হতাশা ছাপিয়ে তখন কেবল আন্তর্জালের কথাই মনে হয়। ইন্টারনেট ছাড়া আমার ভাব প্রকাশের বা দায়িত্ব পালনের আর কোন উপায় আপাতত আছে কি? না, কিছুই খুঁজে পাই না। তাই কেবল লিখেই যাই আর সান্ত্বনা হিসেবে এর পক্ষে কিছু যুক্তি খুঁজে বের করি- হয়ত এই লেখা পড়ে এমন কেউ উদ্বুদ্ধ হল যার কর্মক্ষমতা আমার চেয়ে বেশি। এভাবে একটা হায়ারার্কি তো কাজ করতে পারে, উঠতে উঠতে সেই সচেতনতা কি আমাদের রাষ্ট্রনেতাদেরও ছুঁয়ে দিতে পারে না! আমরা সবাই যদি বিশ্ব জুড়ে মানবতার দলন সম্পর্কে সচেতন হই তাহলে আমাদের নেতারাও কি কিছুটা সচেতন হতে বাধ্য হবে না। কিংবা এরই মাধ্যমে একদিন কি আমাদের মধ্য থেকে মানবতাবাদী কোন নেতার জন্ম হতে পারে না! হয়তো হবে কিছু, হয়তো হবে না…
অকুপেশন ১০১ মূলত মার্কিন দর্শকদের জন্য বানানো। আমেরিকার সাধারণ মানুষকে মার্কিন মিডিয়ার অপপ্রচার সম্পর্কে সচেতন করে তোলাই এর মূল উদ্দেশ্য। প্রামান্য চিত্রের ধারাবর্ণনা করেছেন Alison Weir নামের এক মার্কিন সাংবাদিক যিনি বেশ কিছুকাল যাবৎ ফিলিস্তিনে কাজ করছেন। তিনি ফিলিস্তিনের প্রকৃত অবস্থা সবাইকে জানানোর জন্য “If Americans Knew” নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। মার্কিন দর্শকদের লক্ষ্য করে ডক্যুমেন্টারি বানানোর কারণটিও সহজে বোঝা যায়: বর্তমানে ইসরায়েলের আগ্রাসন থামানোর প্রধান উপায় তার প্রতি মার্কিন সমর্থন তুলে নেয়া। একটা পরিসংখ্যান থেকে অবাক হয়েছি- ১৯৪৯ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে মোট ৬২.৫ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিয়েছে, আর ইসরায়েল ছাড়া বাকি পুরো বিশ্বকেও দিয়েছে ৬২.৫ বিলিয়ন ডলার।
১৯৪৯ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলকে মোট ১০৮ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিয়েছে, অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন দিয়েছে ৬ থেকে ৮ মিলিয়ন ডলার। জায়নিস্ট আন্দোলন সব যুগেই সবচেয়ে পরাক্রমশালী শক্তি থেকে পাওয়া সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছে। এই সুযোগ সন্ধানের ইতিহাস শুরু হয়েছে নেপোলিয়নের যুগ থেকে।
সে সময় তুরস্কের উসমানী সম্রাজ্যের মৃত্যু ছিল আসন্ন। বিশ্বের পরাশক্তিগুলো হা করে তাকিয়ে ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দিকে, মৃত উসমানী সম্রাজ্যের কোন অংশ কে নেবে- এই নিয়ে চলছিল প্রতিযোগিতা। সে সময়ই নেপোলিয়ন সবচেয়ে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনাটি করেন। কিন্তু ওয়াটারলুতে পরাজয়ের কারণে তার সব স্বপ্ন ভেস্তে যায় এবং মঞ্চের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে ব্রিটেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্বভাবতই এই নিয়ন্ত্রণ চলে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। তবে বিস্তারিত ইতিহাসে না গিয়ে আমি সরাসরি ফিলিস্তিনে ইহুদী উপনিবেশ স্থাপনের সূচনালগ্নে চলে যাচ্ছি। কারণ পরিকল্পনার সরাসরি বাস্তবায়ন এখান থেকেই শুরু হেয়েছে। এরকম একপাক্ষিক সেটেলমেন্টের ধারণা অনেকের কাছেই অবাস্তব মনে হতে পারে। নেপোলিয়ন থেকে শুরু করে পুরো ইতিহাস বুঝলে সেটা মনে হওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ রাজনীতির গাণিতিক চালেই সবকিছু হয়েছে। ফিলিস্তিন সমস্যা নিয়ে আমার প্রথম লেখায় ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত পাঠ থাকছে যা ক্ষেত্রবিশেষে “অকুপেশন ১০১” প্রমাণ্য চিত্রটির অনুলিখন।
ফিলিস্তিনে ইহুদী উপনিবেশের ইতিহাস
শুরুটা উনবিংশ শতকের শেষার্ধ থেকে। এ সময়ই ইউরোপে এন্টি-সেমিটিজম তথা ইহুদীবিদ্বেষ দানা বাঁধতে শুরু করে। আর ইহুদীরা নিজেদের একটি রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে শুরু করে। তাওরাতের প্রতিজ্ঞা মতে ফিলিস্তিনেই সেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা। তাওরাতে কোথাও বলা নেই যে, ফিলিস্তিনে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা ইহুদীদের জন্য আবশ্যক। শুধু এ ব্যাপারে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির কথা আছে। কারণ খুব স্বাভাবিক, পয়পম্বর মূসা মিশর থেকে বনি-ইসরাইলদের বের করে নিয়ে এসেছিলেন ফিলিস্তিনে প্রত্যাবর্তনের উদ্দেশ্যেই, যদিও তার জীবদ্দশায় সে প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়ে উঠেনি। পয়গম্বর যীশুর সময় জেরুজালেমে ইহুদী রাজত্বই ছিল, খ্রিস্টান ধর্মমতে ইহুদীরাই যীশুকে শূলে চড়িয়েছিল। কিন্তু খলিফা উমরের রাজত্বকালে মুসলিমরা জেরুজালেম দখল করে এবং এখানে মুসলিম সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য পয়গম্বর মুহাম্মাদের সময় মদীনা থেকেও ইহুদীদের বিতাড়িত করা হয়।
প্রায় সহস্র বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ইহুদীরা বিতাড়িত ও ক্ষেত্রবিশেষে নির্যাতিত হলেও যেকোন যুক্তিবাদী মানুষ নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন যে, এন্টি-সেমিটিজমের উত্থানের যুগে ফিলিস্তিনে ইহুদীদের কোন অধিকারই ছিল না। আমেরিকার সব মানুষই তো ব্রিটেন, ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগাল থেকে এসেছে। তাই বলে এখন তো তারা এসব দেশে ফিরে যাওয়ার দাবী করতে পারে না। ১৮৭৮ সালের একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় ফিলিস্তিন মোটামুটি সমৃদ্ধ একটি দেশ হিসেবে বিরাজ করছিল এবং সেখানে মুসলিম ও খ্রিস্টানরা বেশ শান্তিতে বাস করছিল। সামান্য ইহুদীও ছিল। ১৮৭৮ সালে ফিলিস্তিনে জনসংখ্যার পরিসংখ্যান এরকম:
মোট জনসংখ্যা – ৪৬২,৪৬৫
আরব মুসলিম এবং খ্রিস্টান – ৯৬.৮%
ইহুদী – ৩.২%
কিন্তু নেপোলিয়নীয় নীতির অনুসারী ব্রিটিশদের সহায়তায় ইহুদীরা বেশ দ্রুত ফিলিস্তিনে উপনিবেশ স্থাপন শুরু করে। জাহাজে করে একেকবারে হাজার হাজার ইহুদীকে ফিলিস্তিনে আনা হয়, ঘরবাড়ি করে থাকার জন্য তাদেরকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেয়া হয়। সবাই জানেন, ইহুদীদের আর যাই হোক অর্থের সমস্যা নেই। এদের মধ্যে অনেকে আরবদের কাছ থেকে জমি কিনে নেয়, অনেকে জোরপূর্বক মুসলিম ও খ্রিস্টানদের ঘরবাড়ি দখল করে নেয়। ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের সহায়তার মূল কারণ ছিল- উসমানী খিলাফতের অধীনে থাকা ভূখণ্ডের ভাগ-বাটোয়ারা করার সময় মিশরকে নিরস্ত্র রাখা। ফিলিস্তিন ছিল মিশর নামক বোতলের ছিপি। ব্রিটিশরা ভালোভাবেই উপলব্ধি করেছিল- এই ছিপি আটকে না দিলে মধ্যপ্রাচ্যের ভাগ-বাটোয়ারাতে জাতীয়তাবাদী মিশরীয়রা বাগড়া দেবে। উপনিবেশের স্রোতে ভেসে আসা ইহুদীদের পরবর্তী পরিসংখ্যান লক্ষ্য করা যাক- ১৯২২ সালের পরিস্থিতিটা এরকম:
মোট জনসংখ্যা – ৭৫৭,১৮২
আরব মুসলিম এবং খ্রিস্টান – ৮৭.৬%
ইহুদী – ১১%
পরবর্তী পরিস্থিতির সাথে তুলনা করলে এই উপনিবেশ হারকেও কম বলতে হয়। আসলে ১৯৩৩ সালে হিটলারের ক্ষমতায় অধিষ্ঠানের পূর্ব পর্যন্ত মাথা ঠাণ্ডা রেখেই ইহুদী উপনিবেশের কাজ চলছিল। ১৯৩১ সালের পরিসংখ্যান:
মোট জনসংখ্যা – ১,০৩৫,১৫৪
আরব মুসলিম এবং খ্রিস্টান – ৮১.৬%
ইহুদী – ১৬.৯%
এই প্রথম মানচিত্রের মাধ্যমে মুসলিম ও ইহুদীদের আবাসস্থল দেখাচ্ছি। প্রামাণ্য চিত্রটি থেকে স্ন্যাপশট নিয়েই এটা তৈরী করেছি:
বলাই বাহুল্য হিটলারের অমানবিক ও সাইকটিক এন্টি-সেমিটিজম সব ইহুদীদেরকে ইউরোপ ত্যাগে বাধ্য করে। হিসাব খুব সোজা- বাঁচতে চাইলে ইউরোপ ত্যাগ নয়তো হিটলারের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাশবিক মৃত্যুবরণ। এই সুযোগে জায়নিস্টরা ফিলিস্তিনে ইহুদী উপনিবেশ দ্রুত বাড়াতে শুরু করে। পরিসংখ্যানই তা বলে দেয়। বিভিন্ন সময়ে ফিলিস্তিনে আসা ইহুদী অভিবাসী তথা উপনিবেশ স্থাপনকারীদের পরিসংখ্যান এরকম:
১৮৮২-১৯১৪ সালের মধ্যে – ৬৫,০০০
১৯২০-১৯৩১ – ১০৮,৮২৫
১৯৩৭-১৯৪৫ – ১১৯,৮০০
অর্থাৎ ১৯৩২ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে উপনিবেশ স্থাপনের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। এসময় পুরো বিশ্বের সহানুভূতি ছিল ইহুদীদের প্রতি। কিন্তু আজ পর্যন্ত অধিকাংশ বুদ্ধিজীবী ও মানবতাবাদী সমাজকর্মী বলতে বাধ্য হয়েছেন- “হলোকস্ট তো হিটলার করেছে। এতে ফিলিস্তিনীদের তো কোন দোষ ছিল না। তাহলে ক্ষতিপূরণটা তাদেরকে দিতে হলো কেন?”
মানবিক দিক থেকে এটা খুব অযৌক্তিক মনে হলেও স্বীকার করতে সমস্যা নেই, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তথা রাজনীতির ময়দানে এটা খুব স্বাভাবিক। ভাবলে বিস্মিত হতে হয়- উনবিংশ শতক থেকে ফিলিস্তিনীদের শরণার্থী বানানোর যে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলে আসছে সে সম্পর্কে ফিলিস্তিনীরাও সচেতন হয়ে উঠতে পারেনি। আর এই স্থান নিয়ে যেকোন আন্তর্জাতিক চুক্তি করার সময় প্রকৃত মালিক তথা ফিলিস্তিনীদের কোন মতামতই নেয়া হয়নি।
যাহোক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেনের বদলে পরাশক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আবির্ভাব ঘটে। আমেরিকার ইহুদীরা এবার বিশ্ব মানচিত্র নকশায় নিজেদের অবদান সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠে। কারণ তারা নিজেদের অপরাধী ভাবতে শুরু করেছিল- তাদের সতীর্থ ইহুদীরা ইউরোপ জুড়ে গণহত্যার শিকার হল তারা আমেরিকায় বসে অঢেল বিত্ত-বৈভবের বিলাসে ডুবে রইল। এই অপরাধবোধ থেকে তারা হোটেল বাল্টিমোরকে ঘিরে তুমুল লবিং শুরু করে। ফ্রাংকলিন রুজভেল্টই নির্বাচনে প্রথমবারের মত ইহুদী লবির সাহায্য নিয়েছিলেন। তার উত্তরসূরী ট্রুম্যান সে পথ ধরেই ইহুদীদের জাতীয় রাষ্ট্রের পক্ষে কাজ শুরু করেন। আসলে এ সময়ই আমেরিকার সবচেয়ে শক্তিশালী লবি AIPAC গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবশেষে এই জাতীয় রাষ্ট্র গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয় জাতিসংঘকে (জাতিসংঘ বলতে তো পশ্চিমা পরাশক্তিগুলোর বিশ্বপরিকল্পনাকেই বোঝায়)। জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালে ঐতিহাসিক “দুই জাতি সমাধান” প্রস্তাব করে। তারা প্রাচীন ফিলিস্তিনকে দুই ভাগ করে দুটি দেশ তৈরীর কথা বলে- একটি ইসরায়েল আরেকটি ফিলিস্তিন। এই বিশ্বপরিকল্পনায় ফিলিস্তিনী মুসলিম ও খ্রিস্টানদের প্রতি কেমন অবিচার করা হয়েছে তা নিচের মানচিত্র দেখলেই আশাকরি পরিষ্কার হয়ে যাবে:
এমনকি সবচেয়ে উর্বর জমিগুলো ইহুদীদের দেয়া হয়েছিল। এই দুই জাতি সমাধানও যদি ইসরায়েল মেনে নিতো তাহলেও মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার একটা হিস্যা হতো। যদিও আমি স্বীকার করি- আমি ফিলিস্তিনী হলে কখনও এই অসম বণ্টন মেনে নিতাম না। আশ্চর্যের বিষয় ১৯৯৩ সালে ইয়াসির আরাফাত এর থেকেও একটি বাজে সমাধান মেনে নিয়ে ইসরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। সে প্রসঙ্গে পরে আসছি।
কথা হলো, ইসরায়েল এটাও মানতে পারেনি। তারা তখনই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে ফেলেছে- “আমাদের পুরো ফিলিস্তিন চাই, ফিলিস্তিনকে আমরা ইসরায়েল হিসেবে দেখতে চাই এবং একে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই”। রাজনীতির গণিত অনুসারে ইসরায়েলের এই নীতিকে যুক্তরাষ্ট্রের মেনে নেয়ার কথা। কারণ মধ্যেপ্রাচ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিজেদের পৃষ্ঠপোষক একটি দেশ থাকলেই কেবল সেখানকার অঢেল প্রাকৃতিক সম্পদ ভোগের চিন্তা করা যায়। তাই ১৯৪৮ সালে যখন ইসরায়েল পুরো ফিলিস্তিন দখল করে নেয়ার জন্য আগ্রাসন শুরু করে তখন আমেরিকা সহ পশ্চিমা প্রায় সবগুলো শক্তিই নীরবে সবকিছু দেখে যায়।
শুরু হয় “১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ”। এখানে আরব বলে বোধহয় ইসরায়েলীদেরই অপমান করা হল। কারণ আরবরা ফিলিস্তিনীদের নির্বিচারে হত্যা দেখার অনেক পরে সাড়া দিয়েছে। ইহুদীরা ফিলিস্তিনের বেশ কয়েকটি গ্রামে গণহত্যা চালিয়েছে। সবচেয়ে বড় গণহত্যা ঘটেছিল দাইর ইয়াসিন গ্রামে। এই গ্রামের ৬০০ জনের মধ্যে ১২০ জনকেই তাৎক্ষণিকভাবে হত্যা করেছিল ইসরায়েলী সৈন্যরা। যাহোক দেরিতে হলেও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর টনক নড়ে। ফিলিস্তিনের সীমান্তবর্তী মিশর, জর্ডান এবং সিরিয়া যুদ্ধে যোগ দেয়। অন্যান্য কয়েকটি আরব দেশও ফিলিস্তিন রক্ষায় এগিয়ে আসে। আমার মনে হয় না সে সময়ও আরবরা ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের যে ক্ষতি হবে তা বুঝতে পেরেছিল। একটি রাষ্ট্রকে যুদ্ধে টেনে আনার জন্য ভ্রাতৃত্ব যথেষ্ট নয়, এখানে রাজনৈতিক চালের অবদান আছে যেটার অভাব সেই মধ্যপ্রাচ্যে প্রকট ছিল। তারপরও কিছুটা লাভ হয়েছে মিশরের যোগদানে। কারণ দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র মিশরই সবদিক গুছিয়ে বিশ্বমানচিত্রে নিজের আসন প্রমাণের উপযোগী অবস্থা পৌঁছেছিল। কিন্তু পুরো যুদ্ধ জুড়ে ইসরায়েলীদের আধিপত্য বজায় থাকে। সৈন্যের পরিসংখ্যান দেয়াই এক্ষেত্রে যথেষ্ট হবে:
আরব সৈন্য – ৬৮,০০০
ইসরায়েলী সৈন্য – ৯০,০০০
ইসরায়েলের প্রত্যেক যুবকের যুদ্ধ করা বাধ্যতামূলক ছিল। তারা ফিলিস্তিনের ৫০০ টি গ্রামের মধ্যে ৪০০ টিকেই জনশূন্য করে ফেলেছিল। যুদ্ধ শেষে তাই পুরো ফিলিস্তিন অধিকারে তাদের খুব একটা বাঁধা ছিল না। ফিলিস্তিনের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ শরণার্থীতে পরিণত হয়েছিল। পুরো ফিলিস্তিনটা ছিল এক শরণার্থী শিবির। ফিলিস্তিনে এমন একটা পরিবারও বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা কমপক্ষে দুই বার নিজ বাসস্থান থেকে বিতাড়িত হয়নি। ১৯৪৮ সালেই ইসরায়েল নিজেকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে এবং মধ্যপ্রাচ্য, ভারতীয় উপমহাদেশ এবং এমন কিছু দেশ বাদে সবাই তাকে স্বীকৃতি দেয়। এই যুদ্ধের পর ফিলিস্তিন বলে পৃথিবীতে আর কোন দেশের অস্তিত্ব থাকে না। ইসরায়েল নামে একটি স্বাধীন দেশ হয়, ফিলিস্তিনের যে অংশটুকু তারা দখল করতে পারেনি সে অংশ মিশর এবং জর্ডান ভাগাভাগি করে নেয়। গাজা উপত্যকা মিশরের অধীনে আসে, জর্ডান পায় পশ্চীম তীর। মানচিত্র দেখা যাক সে সময়কার ফিলিস্তিনকে:
এতেও ইসরায়েলের খায়েশ মেটে না। সবার চোখের সামনে ফিলিস্তিনী উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলতে থাকে। ১৯৫৭ সালের পর ৪০০,০০০ ফিলিস্তিনী বাস্তুহারা হয় যাদের অর্ধেক ইতিমধ্যেই শরণার্থী ছিল। বাস্তুহারাদের অনেকেই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয় একটু ঠাই পাবার জন্য। উল্লেখ্য যুদ্ধপরবর্তী ইসরায়েলের মধ্যেও তখন অনেক ফিলিস্তিনী বাস করতো। এদের প্রায় সবাই বাস্তুহারা হওয়ার পর ইসরায়েল গাজা এবং পশ্চিম তীরের দিকে নজর দেয়। মিশর এবং জর্ডানের কাছ থেকে এ অংশ দুটো কেড়ে নেয়ার জন্য আবার যুদ্ধ শুরু করে। এভাবেই “১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ” শুরু হয়। এই যুদ্ধ শেষে ফিলিস্তিনের (থুক্কু ইসরায়েলের) মানচিত্র দাড়ায় এরকম:
হল তো এবার। ১৯৬৭ সালেই পুরো ফিলিস্তিন ইসরায়েলের অধিকারে চলে আসল। কিন্তু জায়নিস্টরা জানতো- ক্ষমতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। এজন্য দরকার ছিল, ফিলিস্তিনীরা যাতে কোনভাবেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখা। ইসরায়েলীরা ঠিক এ কাজটাই করে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের আগে জেরুজালেমের দুই ভাগ ছিল- পশ্চিম জেরুজালেম ছিল ইসরায়েলের রাজধানী। আর পূর্ব জেরুজালেম ছিল জর্ডান অধিকৃত পশ্চিম তীরের রাজধানী। এ সময়ই ইয়াসির আরাফাতদের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনীদের আন্দোলন জোরেশোরে শুরু হয় এবং তারা পূর্ব জেরুজালেমকেই নিজেদের রাজধানী হিসেবে দেখতে থাকে। উল্লেখ্য ঐতিহাসিক “বায়তুল মুকাদ্দাস” এই পূর্ব জেরুজালেমেই অবস্থিত।
ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরে যেন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হতে না পারে সেজন্য ইসরায়েল গাজা এবং পশ্চিম তীরের অভ্যন্তরে অসংখ্য সামরিক চেকপোস্ট স্থাপন করে। প্রথমে গাজা উপত্যকার ছবি দেখা যাক। এখানে যে ইহুদী বসতিগুলো দেখা যাচ্ছে ২০০৫ সালে তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। পশ্চিমা মিডিয়া ইসরায়েলের এই বদান্যতা রসিয়ে রসিয়ে প্রচার করে। যেন তারা নিজেদের জায়গা জমি ছেড়ে দিচ্ছে ফিলিস্তিনীদের জন্য। এখনও গাজা উপত্যকার সব গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে মোড়ে ইসরায়েলী চেকপোস্ট আছে। এক গ্রামের মানুষ আরেক গ্রামে যেতে পারে না, কেউ তাদের অন্য গ্রামের আত্মীয়দের সাথেও দেখা করতে পারে না।
পশ্চিম তীরের অবস্থা আরও খারাপ। বলা যায় পুরো পশ্চিম তীরই ইসরায়েলী বসতিতে ছেয়ে গেছে। সবগুলো রাস্তা তাদের করা এবং রাস্তার মাধ্যমে তারা মূলত ফিলিস্তিনী গ্রাম-শহর পৃথিকীকরণের কাজই করছে।
পরিস্থিতি দেখে সহজেই বোঝা যায়, ইসরায়েলীরা চাচ্ছে সব ফিলিস্তিনী জায়গা জমি ছেড়ে চলে যাক। অকুপেশন ১০১ এ একজন ইহুদী বিশেষজ্ঞ জোড় দিয়েই এই কথাটি বলেছেন। আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানের জনক নোম শমস্কিকেও (MIT অধ্যাপক) এ কথা বলতে শুনলাম। নোম শমস্কি প্রামাণ্য চিত্রটির দুই স্থানে কথা বলেছেন।
এ প্রসঙ্গে এডওয়ার্ড সাইদের কথাও এসে যায়। তার “দি এন্ড অফ দ্য পিস প্রসেস” বইয়ে পড়েছিলাম- ইয়াসির আরাফাত ১৯৯৩ সালে “অসলো চুক্তি” স্বাক্ষর করে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ঠিকই কিন্তু নোবেল ছাড়া এই চুক্তির আর কোন ফলাফল নেই। অসলো চুক্তির মাধ্যমে আরাফাত ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ইসরায়েল তার কথা রাখেনি। প্রামাণ্য চিত্রটিতে দেখলাম, এই চুক্তি যে বছরগুলোতে কার্যকর ছিল তখনই ফিলিস্তিনে সবচেয়ে বেশি উচ্ছেদ কার্যক্রম চলেছে। বুলডোজার দিয়ে ফিলিস্তিনীদের বাড়িঘর গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, সেখানে সরকারী অর্থায়নে বিলাসবহুল উপনিবেশ তৈরী করা হয়েছে, ইহুদীদের সেখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এমনকি আসার বিনিময়ে তাদেরকে অগ্রীম অর্থও দেয়া হয়েছে। সাইদ নিজেই ম্যান্ডেলার সাথে তুলনা দিয়ে আরাফাতের অক্ষমতা তুলে ধরেছিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের পুরোটা সময় নেলসন ম্যান্ডেলা নিজ নীতিতে অটল ছিলেন। একবারের জন্যই নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেননি, কারও কাছে মাথা নত করেননি, কোনরকম ফালতু চুক্তিতে স্বাক্ষর করেননি। আর ইয়াসির আরাফাত যাত্রা শুরু করেছিলেন লেবাননে, সশস্ত্র বিপ্লবী হিসেবে। তখন তার একমাত্র দাবী ছিল পুরো ফিলিস্তিন নিজেদের অধিকারে আনা। সেখান থেকে নড়তে নড়তে শেষে এসে তিনি অসলো চুক্তি করলেন, স্বাধীনতার আশা না দেখা সত্ত্বেও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিলেন। নেতৃত্বের অভাবও ফিলিস্তিনে প্রকট।
ইতিহাসের এই পাঠ গ্রহণের পর ফিলিস্তিনীদের কোন কাজকেই অনৈতিক মনে হয় না। তাদের আত্মঘাতী বোমা হামলাকেও খুব মানবিক কাজ মনে হয়, “প্যারাডাইস নাউ” সিনেমার তাৎপর্য বুঝতে পারি। ফিলিস্তিনীরা সহ্য করতে করতে অবশেষে ১৯৮৭ সালে জ্বলে উঠেছিল। শুরু হয়েছিল “প্রথম ইন্তিফাদা”। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত এটা কার্যকর ছিল। এর পর অসলো চুক্তি হল। চুক্তির সর্বাঙ্গীন ব্যর্থতা ফিলিস্তিনীদেরকে আবার জ্বালিয়ে তোলে। ২০০০ সালে শুরু হয় “দ্বিতীয় ইন্তিফাদা” যাকে অনেক সময় আল-আকসা ইন্তিফাদাও বলা হয়। ২০০৮ সালে এটাও শেষ হয়েছে। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ফিলিস্তিনে মৃতের সংখ্যা বরাবরের মত ইসরায়েলীদের ৪ গুণই থেকে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় নিহতের পরিসংখ্যান এরকম:
অথচ বিশ্ব মিডিয়াতে ইসরায়েলীদের হত্যাযজ্ঞকে বলা হচ্ছে যুদ্ধ, আর ফিলিস্তিনীদের প্রতিরক্ষাকে বলা হচ্ছে সন্ত্রাস। অবশ্য এত হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমরা বুঝতে পেরেছি আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়া ফিলিস্তিনের মুক্তি সম্ভব না এবং সেই সহায়তার প্রেক্ষাপট নিশ্চয়ই তৈরী হবে। অকুপেশন ১০১ এর মত প্রামাণ্য চিত্র মার্কিনীদের চোখ খুলতে সাহায্য করবে। ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি মুভমেন্ট আরও প্রসার পাবে। এগুলোই আমাদের স্বপ্ন। কারণ পৃথিবীটা এত ছোট হয়ে গেছে যে প্রতিটি কোণে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লংঘন আমাদের স্পর্শ করে। চোখের সামনে এগুলো ঘটতে দেয়া মানুষ হিসেবে আমাদের অপরাধ। জানি, আমার কিছুই করার নেই। তাই কলম হাতে নেমেছি। কলমই তো মানুষের আবিষ্কৃত সবচেয়ে কার্যকরী অস্ত্র। আমরা যদি চাই পৃথিবীতে কলম ছাড়া আর কোন অস্ত্র থাকবে না, তাহলে আন্তর্জাতিক আলোচনার মাধ্যমেই ইসরায়েলের মত সমস্যার সমাধান করতে হবে। সামরিকায়নের যুগ শেষ হোক এটাই তো চাই।
মানুষ হিসেবে অন্য সব মানুষকেই সমান চোখে দেখি। সাধারণ ইহুদীদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণেরও তাই প্রশ্ন ওঠে না। আর অকুপেশন ১০১ এ যত বিশেষজ্ঞ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তার শতকরা নব্বই ভাগই ইহুদী। তারা সবাইকে এগিয়ে আসতে বলছেন। কারণ বুদ্ধিজীবীরা যাই বলুন সরকার না চাইলে অর্থাৎ রাজনীতির গণিতে পরিবর্তন না আনতে পারলে কোনই লাভ নেই। এই লেখা পড়ে উৎসাহিত হওয়া কোন একজন মানুষও যদি এ ব্যাপারে কিছু করার ক্ষমতা রাখেন তবেই তো অনেক। যদিও জানি সে সম্ভাবনাও অনেক কম। আবার আমাদের হাতে সময়ও খুব কম। ফিলিস্তিনী মনোবিজ্ঞানী ডঃ ইয়াদ সিরাজ (Iyad Sarraj) বলছেন, ফিলিস্তনের অর্ধেকেরও বেশি শিশুর বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই, বড় হওয়ার ইচ্ছা নেই। কারণ তারা তাদের বাবা-মাকে সবসময়ই ইসরায়েলী সৈন্যদের হাতে অপমানিত হতে দেখে। তাদের সামনেই তাদের বাবাকে মারা হয়। অকুপেশন ১০১ এ এমন একটি মেয়েকে দেখলাম- বয়স ৫-৬ এর বেশি হবে না, সে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।
অথচ আজ থেকে ১০০ বছর আগে জেরুজালেমের অবস্থা এমন ছিল না। তখনও জেরুজালেমে মুসলিম-খ্রিস্টান-ইহুদীরা ছিল। তারা একে অন্যের ছেলেমেয়েদের বেবি সিটার হিসেবেও কাজ করতো। আর আজকে একটি গোষ্ঠীর গগনচুম্বী অপস্বপ্নে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আরেকটি গোষ্ঠী। ইহুদীরা বন্দুকের নিশানা দিয়েই কেবল ফিলিস্তিনীদের দেখছে। ইসরায়েলীরা একজন সাধারণ মানুষের চোখ দিয়ে দেখতে শিখুক, আবার…
ফিলিস্তিনী শিশু
***** ***** *****
তথ্যসূত্র: ”ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রাম: ইহুদী ষড়যন্ত্র ও আরবদের ভূমিকা” – মুহাম্মাদ হাসনাইন হাইকল
কিংবা গুগল ভিডিও থেকে সরাসরি দেখতে পারেন:
প্রকাশিত লেখা বা মন্তব্য সম্পূর্ণভাবেই লেখক/মন্তব্যকারীর নিজস্ব অভিমত। এর জন্য ক্যাডেট কলেজ ব্লগ কর্তৃপক্ষকে কোনভাবেই দায়ী করা চলবেনা।
৩৪ টি মন্তব্য : “ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রাম”