ফাইল ছবি
করোনাভাইরাস মহামারীতে গত ষোল মাসের মধ্যে অর্ধেক সময় বন্ধ থাকায় আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা।
");
}
নিজস্ব আয়ে চলা এ প্রতিষ্ঠানে প্রাণীদের খাদ্য এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার খরচ মেটাতে ভাঙতে হচ্ছে জমানো টাকা।
আরও দুই মাস এ পরিস্থিতি চললে কর্মীদের বেতন-ভাতাও বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন চিড়িয়াখানার পরিচালনা পর্ষদের সচিব হাটহাজারীর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ফয়’স লেক এলাকায় ছয় একর পাহাড়ি জমিতে নির্মিত চিড়িয়াখানাটি পরিচালনার দায়িত্বে আছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
ফাইল ছবি
১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ চিড়িয়াখানা সরকারি অনুদান ছাড়া টিকেট বিক্রির নিজস্ব আয়ে প্রাণী সংগ্রহ, খাদ্য, কর্মচারীদের বেতনভাতাসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করে আসছিল। বলা হত, এটাই দেশের একমাত্র ‘লাভজনক’ চিড়িয়াখানা।
রুহুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ চিড়িয়াখানায় টিকেট বিক্রি থেকে সপ্তাহের পাঁচ দিন গড় আয় হত এক লাখ টাকা। আর শুক্র, শনিবার এবং অন্যান্য ছুটির দিনে তা বেড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকায় দাঁড়াত।
“মাসে ৩০ লাখের বেশি টাকার টিকেট বিক্রির আয় থেকে প্রাণীদের খাদ্য, ওষুধ ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ ১৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হত। বাকি টাকা ব্যাংকে সঞ্চয় করা হত।”
গত কয়েক বছরে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বাঘ, জেব্রা কেনা থেকে শুরু করে উন্নয়ন কাজে ব্যয় হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। চিড়িয়াখানার নিজস্ব আয় থেকেই সেসব খরচ মেটানো হয়েছে বলে জানান রুহুল আমিন।
তিনি বলেন, প্রতি ঈদের ছুটিতে সাত দিনে চিড়িয়াখানায় টিকিট বিক্রি হয় অন্তত ৪০ লাখ টাকার। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত তিন ঈদে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকায় আয়ও ছিল বন্ধ।
সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে গত বছরের ২০ মার্চ থেকে পাঁচ মাস বন্ধ ছিল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। এবছর ১ এপ্রিল থেকে আবার বন্ধ রাখা হয়েছে।
রুহুল আমিন বলেন, অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রাখা হলে শুধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন ভাতার খরচ লাগে। চিড়িয়াখানার বিষয়টি তেমন নয়। প্রাণীগুলোর খাবারের জন্য প্রতিদিনই একটি বরাদ্দ রাখতে হয়।
ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৬৬ প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ৪০ প্রজাতির পাখি, আর অন্যগুলো বিভিন্ন ধরনের পশু। এগুলো দেখভালের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন ১৯ জন।
চিড়িয়াখানার চিকিৎসক ও ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন শুভ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পশু-পাখির প্রজনন বেড়েছে। বর্তমানে এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে বাঘ রয়েছে নয়টি। এছাড়া সিংহ, জেব্রা, ভালুক, কুমিরসহ রয়েছে নানা প্রাণী।
এসব প্রাণীদের জন্য দৈনিক ৪০ কেজি মাংস এবং ৫০০ কেজি সবজির প্রয়োজন হয়। বাঘের জন্যই মাংস লাগে ২২ কেজি। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের পাখির খাবার, কলা, শসাও ডিম প্রয়োজন হয় বলে জানান এ প্রাণী চিকিৎসক।