কক্সবাজার প্রতিনিধি,
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 27 Jun 2021 02:22 PM BdST
Updated: 27 Jun 2021 05:14 PM BdST
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারে তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর কমে গেছে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনা।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত।
");
}
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ইসমাইল রোববার এ মামলার অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, সিনহা হত্যা মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৮৩ জনকে। আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই তিনদিনে এসব সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
আসামিরা হলেন: পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, মোহাম্মদ মোস্তফা, এপিবিএন এর তিন সদস্য এসআই মোহাম্মদ শাহজাহান, কনস্টেবল মোহাম্মদ রাজীব ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী নুরুল আমিন, নেজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াজ, টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মা এবং সাবেক এএসআই সাগর দেব।
তাদের মধ্যে প্রদীপ, নন্দ দুলাল ও সাগর দেবের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলেও শুনানি শেষে বিচারক তা নাকচ করেছেন বলে ফরিদুল আলম জানান।
সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আসামিদের সবাইকে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে আদালতে নেওয়া হয়।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারে তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর কমে গেছে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫ তে দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম গতবছর ১৩ ডিসেম্বর আলোচিত এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
গতবছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ।
তিন বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া রাশেদ ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন।
ওই কাজে তার সঙ্গে ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ।
কক্সবাজারের পুলিশ সে সময় বলেছিল, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।
পুলিশ সেদিন ঘটনাস্থল থেকেই সিফাতকে গ্রেপ্তার করে। পরে নীলিমা রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শিপ্রাকে।
সিনহা নিহতের ঘটনায় এবং গাড়ি থেকে মাদক উদ্ধারের অভিযোগে টেকনাফ থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ, যাতে সিনহা এবং তার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আসামি করা হয়।
আর নীলিমা রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে গ্রেপ্তার করার সময় মাদক পাওয়া যায় অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে রামু থানায় মামলা করা হয়।
কিন্তু পুলিশের দেওয়া ঘটনার বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতবছর ২ অগাস্ট উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটি গঠন করে। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যার’ অভিযোগগুলোও নতুন করে আলোচনায় আসতে শুরু থাকে।