প্রকাশ : ৩ জুলাই, ২০২১ ১০:১৮
আপডেট : ৩ জুলাই, ২০২১ ১০:১৯
অনলাইন ভার্সন
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী নির্যাতনে তোলপাড়
তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন প্রধান কারারক্ষীসহ দুজন বরখাস্ত
আনিস রহমান
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে প্রকাশ্যে ভয়াবহ বন্দী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা ইউটিউব ফেসবুকসহ নানা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ এবং কারা অধিদফতরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে।
কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের দুর্গাপুর গ্রামের আবদু মিয়ার ছেলে শাহজাহান বিলাস (কয়েদি নম্বর ৭১৫১/এ) ডাকাতি ও হত্যা মামলার ৫৮ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ২৬ বছর ধরে তিনি কুমিল্লা কারাগারে বন্দী। সম্প্রতি তিনি ১২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, এক পুড়িয়া গাঁজা, নগদ ৬০০ টাকাসহ কারারক্ষীদের হাতে ধরা পড়েন। এর পর তাকে কারাভ্যন্তরে কেস টেবিলের সামনে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ। ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে বন্দী বিলাসের দুই হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে মাটিতে ফেলে বেধড়ক পেটানো হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই নির্যাতনে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর তাকে ফের কারাগার সেলে পাঠানো হয়। বন্দী নির্যাতনের বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও কারা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের নজরে আসে। পরে তাদের নির্দেশে এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র সুপার শফিকুল ইসলাম খানকে। সদস্য দুজন হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারের জেল সুপার ইকবাল হোসেন ও ফেনী জেলা কারাগারের জেলার শাহাদত হোসেন মিঠু।
এদিকে তোলপাড় সৃষ্টি করা ভিডিওটি ভাইরাল করার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী মোহাম্মদ শরীফ ও কারারক্ষী অনন্ত চন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়ার পর গতকাল কারারক্ষী অনন্ত চন্দ্র দাস আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বন্দী নির্যাতনের ব্যাপারে জানতে চাইলে কুমিল্লার জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ বলেন, গত ১২ এপ্রিল বন্দী বিলাসের ওয়ার্ডে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবা, গাঁজা, সিগারেট ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়। পরে তাকে কেস টেবিলে ডেকে এনে মাদক ধ্বংস ও জব্দ করা টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়ার কথা বললেই সে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। এ জন্য তাকে লঘু শাস্তি দেওয়া হয়।
এই বিভাগের আরও খবর