comparemela.com


নঈম নিজাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২১
দোষটা কার? রাজনীতিবিদ ব্যক্তিত্বহীন হলে আমলারা সীমাহীন দাপুটে হন। আর আমলারা সীমাহীন দাপুটে হলে সবকিছুতে অস্বস্তি তৈরি হয়।
সেদিন এক সাবেক আমলা বন্ধু বর্তমান বাস্তবতা নিয়ে আমাকে কিছু কথা লিখে পাঠালেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমলারা কি কখনো দুর্নীতিতে রাজনীতিবিদদের চেয়ে কম ছিলেন? আমলা বলতে নিম্ন থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত সরকারি  কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে সরকারি প্রশাসনযন্ত্রের কথা বলছি। রাজনীতিবিদদের মধ্যে সত্যিকারের দুর্নীতিবাজের সংখ্যা সবচেয়ে কম। প্রশাসনযন্ত্র জনপ্রতিনিধিদের হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য জনস্বার্থে নেওয়া তাদের কিছু কর্মকান্ড এবং কিছু অনিচ্ছাকৃত অনিয়মকে ব্যাপকভাবে তুলে আনে। এ ক্ষেত্রে মিডিয়া সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে মুখরোচকভাবে এসব বিষয় প্রচার করে রাজনীতিবিদদের চরিত্রহননে প্রশাসনযন্ত্রকে সহায়তা করে। রাজধানীসহ সারা দেশে স্থাবর সম্পত্তির ওপর গবেষণা করলে বোঝা যাবে সমাজের কোন অংশের কত সম্পত্তি আছে আর কত থাকার কথা। রাজনীতিবিদদের পেশা ব্যবসা বা অন্য কিছু। কিন্তু সরকারি কর্মচারীদের আয়ের উৎস একমাত্র চাকরি। আর একটি কথা- একজন জনপ্রতিনিধির জীবন ফলো করলে দেখা যাবে কত জনকে সারা দিন বিভিন্নভাবে আর্থিক সাহায্য দিতে হয় তাকে, সরকারি বরাদ্দের বাইরে। এসব কোনো কিছু গবেষণায় আসে না। ’ ঠিকই বলেছেন। ভিন্নমত পোষণ করি না। রাজনীতিবিদরাই নিজেদের খাল কেটে কুমির আনেন। আর সুযোগ নেন আমলারা।
ওয়ান-ইলেভেনের পর অনেক রাজনীতিবিদকে দেখতে যেতাম কারাগারে, হাসপাতালে, আদালতে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দল-মতের বাইরে সবাইকে নিয়ে খাওয়ার আয়োজন করতেন চট্টগ্রামের এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। তিনি আয়োজন করতেন খাওয়ার কাফেলা। জেলখানায় দল -মতের বিভেদ ছিল না। সবাই ছিলেন ওয়ান-ইলেভেন সরকারের বিরুদ্ধে। কুমিল্লা কারাগারে নামাজের ইমামতি করতেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। সব দলের নেতারা নামাজে অংশ নিতেন। একসঙ্গে মোনাজাতে প্রার্থনা করতেন কারামুক্তির। কাশিমপুরে দলবেঁধে সবাই বিকালের আড্ডা দিতেন। খেলতেন ভলিবল, ব্যাডমিন্টন। দাবা/তাসের আসরও বসত পড়ন্ত বিকালে। মোসাদ্দেক আলী ফালু দুই দলের নেতাদের খোঁজ নিতেন। জানতে চাইতেন কারও কিছু লাগবে কি না। কারাগারের মসজিদগুলোর আধুনিকায়ন নিয়েও ব্যস্ত থাকতেন তিনি। একদিন ঢাকার আদালতপাড়ায় গিয়েছিলাম একজনকে দেখতে। দেখলাম পুলিশ ভ্যানের ভিতরে বসে দুপুরের খাবার খাচ্ছেন সালমান এফ রহমান, রেদোয়ান আহমেদ, সিলভার সেলিমসহ অনেকে। অসহায়ের মতো সবাই হাজিরা দিতে আসতেন। নিজেদের মাঝে আলাপ করতেন, কোনো দিন সব স্বাভাবিক হলে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করবেন। কোনো বিরোধ থাকবে না। পরস্পরের মাঝে কোনো দূরত্ব থাকবে না। একসঙ্গে এগিয়ে নেবেন বাংলাদেশকে। বিচার করবেন ওয়ান-ইলেভেনের খলনায়কদের। দেশ চলবে রাজনীতিবিদদের কথায়। সেই যুগ নেই। সময়ও নেই। বাস্তবতা হারিয়ে গেছে কোথায় যেন। ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেওয়াই ইতিহাসের শিক্ষা।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এখন ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য। রাজনীতিবিদদের পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। সত্যিকারের রাজনীতিবিদের সংখ্যা কমছে। মন্ত্রিসভায় কতজন ত্যাগী নেতা, দুঃসময়ের মানুষ আছেন? সবখানে সমস্যা, নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ তুঙ্গে। রাজনীতি এখন আর রাজনীতিবিদদের কাছে নেই। নেতাদের অবস্থান খাটো হচ্ছে ঘরে বাইরে। আগাছা-পরগাছা ভর করেছে সরকারি দলে। চর্বি জমেছে ক্ষমতার স্তরে স্তরে। অতিমেদ শরীরের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি বয়ে আনে। পরগাছাদের ওপর নির্ভরশীল ক্ষমতাবান দলেরও ধীরে ধীরে বারোটা বাজে। জানি এসব কথা বলে লাভ নেই। কেন লাভ নেই একটা ঘটনার কথা বলছি। এরশাদের পতনের পর আটক হলেন বিদায়ী মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ। জেল খেটে বের হলেন। তিনি তখন থাকতেন ওয়ালসো টাওয়ারে। ফিরোজ ভাইকে দেখতে গেলাম। তিনি কারাজীবনের বিভিন্ন কষ্টের কথা বলছিলেন। কারাভ্যন্তরে অনিয়মের শেষ নেই। দুঃখ করে বললেন, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে রাজনীতিবিদরা জেলে গেলে রাজবন্দীর মর্যাদা পেতেন। সম্মান পেতেন। এখন তা নেই। রাজনীতিবিদরা পরস্পরকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ পান। এ নিষ্ঠুরতা বন্ধ করা দরকার। সবকিছু শুনে বললাম, ফিরোজ ভাই আপনি রাজনীতি করেন। কোনো দিন আবার সুযোগ পেলে সবকিছু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবেন। জেলখানার পরিবর্তন আনা কঠিন কিছু নয়। পরিবর্তন তো রাজনীতিবিদরাই আনেন। জবাবে তিনি বললেন, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলেও কিছুই ঠিক হবে না। ভুলে যাব নিজের অতীত। কারাগারের কষ্ট। অন্য মতের মানুষকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ অনুভব করব। রাজনীতি ভীষণ খারাপ বিষয়।
বয়স বাড়লে মানুষের অতীত বেশি মনে পড়ে। পরিবর্তনের একটা আশা নিয়ে বসে থাকে সাধারণ মানুষ। কিন্তু মানুষের সে আশা আর পূরণ হয় না। রাজনীতি চলে তার আপন মহিমায়। বলছি না সবকিছু স্বাভাবিক। সংকট আমাদের আছে, থাকবে। কিন্তু একজন রাজনীতিবিদকে বাদ দিয়ে কিছুই হবে না। কিছুই হয় না। কথায় কথায় শুধু আমলাদের দোষারোপ করেও লাভ নেই। ব্যক্তিত্ব সবার নিজের কাছে। রাজনীতিবিদ দুর্বল ব্যক্তিত্বের হলে আমলারা সুযোগ নেবেনই। ব্যক্তিত্ববান রাজনীতিবিদ কখনই আমলানির্ভর নন। মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ হলে কি আমলাকে গুরুত্ব দিয়ে মন্ত্রণালয় চালাবেন? প্রবীণ নেতাদের কথা বাদই দিলাম। জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুব-উল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম কি আমলাদের কথায় চলবেন? সর্বনাশটা হয়েছে ২০১৮ সালের ভোটের কারণে। লাউ, ডাল সব এক হয়ে গেছে। আর হয়েছে বলেই আমলাদের মাঝে একটা অহমিকা তৈরি হয়েছে, তারা সরকারকে ক্ষমতায় এনেছেন। আরে ভাই, ইতিহাস ভুলে গেলে কি চলে? ২০১৪ সাল আর ২০১৮ এক ছিল না। ২০১৪ সালের নির্বাচনকালীন সরকারি দল দুর্বল অবস্থানে ছিল। আর ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ ছিল চাঙা। হামলা-মামলায় বিএনপি কাবু ছিল। আগুনসন্ত্রাসের মামলাগুলোয় বিএনপি প্রার্থীরা এলাকায় যেতে পারতেন না। কর্মীরা বের হতেন না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। ব্যবসায়ীরা সমাবেশ করে শেখ হাসিনার পক্ষে নিজেদের অবস্থানের কথা জানান দেন। মিডিয়া থেকে শুরু করে সবকিছুই আওয়ামী লীগের অনুকূলে ছিল। এখানে শতভাগ নিরপেক্ষ ভোট হলেও বিশাল ব্যবধানে জিতত আওয়ামী লীগ। পরিষ্কারভাবে বলছি, আমলা-কামলাদের ভোট নিয়ে অতি উৎসাহ আওয়ামী লীগের সর্বনাশ করেছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা লড়াইটা করেছেন ভোট ও ভাতের। অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ আজ সমৃদ্ধ। মানুষের ভাতের চিন্তা এখন আর করতে হয় না। আমলাদের ভোট প্রকল্পের কান্ডকীর্তিতে উপকার হয়নি। ক্ষতির রেশ এখন টানতে হচ্ছে রাজনীতিবিদদেরই।
রাজনীতিবিদদের সঙ্গে লড়াইকারী একজন আমলা ছিলেন কামরুল ইসলাম সিদ্দিক। এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন। পরে পিডিবির চেয়ারম্যান ও সচিব হয়েছিলেন। বীর এই মুক্তিযোদ্ধা রাজনীতিবিদদের পাত্তা দিতেন না। এমপিরা দেখা করতে গেলে অনেক সময় সাক্ষাৎও করতেন না। ২৪ ঘণ্টা কাজ করতেন। ঘুমাতেন কয়েক ঘণ্টা মাত্র। রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করে আবার ঘুম থেকে উঠতেন ফজরের আজানের সময়। নামাজ শেষ করে আবার কাজ শুরু করতেন। সচিবালয়ের দুই রুম থেকে শুরু করে আজকের বিশাল এলজিইডির বিকাশ তাঁর হাতে। সচিবালয় থেকে লালমাটিয়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে আনলেন এলজিইডি অফিস। মাঝেমধ্যে যেতাম। একদিন তাঁকে প্রশ্ন করলাম, রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন না, অভিযোগ উঠছে। তিনি বললেন, রাজনীতিবিদদের সবচেয়ে সম্মান করি। তাঁরাই দেশ চালাচ্ছেন, চালাবেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি রাজনীতিবিদদের মুজিবনগর সরকারের অধীনে। মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ছিলাম। দেশকে ভালোবাসি সবার আগে। কোনো এমপি উন্নয়নকাজে এলে ফেরত দিই না। শতভাগ উন্নয়নের কাজ করি। কিন্তু এমপি সাহেবদের ঠিকাদারি বা অন্য কোনো উন্নয়নবহিভর্‚ত তদবিরগুলো করি না। যারা এ ধরনের কাজ করেন তাদের একটু এড়িয়ে চলি। তিনি আরও বলেছিলেন, দেশের পরিবর্তনের জন্য ভালো মন্ত্রী দরকার। যারা দক্ষ হাতে সব সামলাবেন।
স্বপ্নবাজ, সফল কামরুল ইসলাম সিদ্দিক তাঁর জীবনে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেননি। সময় পাননি শুরু করতে গৃহহীনদের জন্য স্বল্প খরচে ঘর নির্মাণ। ১৯৯৬ সালে তিনি সে প্রকল্প নিয়েছিলেন। সিদ্ধান্ত ছিল ১ লাখ টাকার ভিতরে ঘর করবেন গরিবের জন্য। একদিন জানতে চাইলাম কী করে সম্ভব এত কম খরচে পাকা ঘর করার। তিনি বললেন, অবশ্যই সম্ভব শতভাগ সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে কাজটা করলে। এত বছর পর কথাগুলো মনে পড়ল। সাম্প্রতিক সময়ে কম খরচে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। ’৯৬ সালের ১ লাখ এখন অনেক টাকা। আমলারা নিজেদের অতিবুদ্ধি খরচ করতে গিয়েই সমস্যাটা তৈরি করেছেন। প্রকল্পের খরচের হিসাবটা আরেকটু বাড়িয়ে টেকসই ঘর নির্মাণের দরকার ছিল। কৃপণতা করতে গিয়ে সমস্যাটা তৈরি হয়েছে। আবার সব উপজেলায় সরকারি ভালো খাসজমিও নেই। চর বা নিম্নাঞ্চলের জমির অবস্থা সবারই জানা। বাস্তবতার সঙ্গে হিসাব-নিকাশ মেলানো জরুরি ছিল। তা করা হয়নি। রাজনীতিবিদরা যুক্ত থাকলে চুরি বাড়ত কি কমত সে বিতর্কে যাচ্ছি না। তবে এটুকু বলছি, হয়তো এত বিতর্ক তৈরি হতো না।
চলার পথে কাজ করতে গেলে সমালোচনা শুনতে হবে। শুধু প্রশংসাই শুনবেন এমন আশা করা ঠিক নয়। ‘নাইট’ উপাধি ত্যাগ করেন রবীন্দ্রনাথ জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে। এ নাইট উপাধি নেওয়ার পর একদল লোক বলেছিল, রবীন্দ্রনাথ শেষ হয়ে গেলেন। ব্রিটিশদের কাছ থেকে নাইট উপাধি নেওয়া ঠিক হয়নি। আবার ছেড়ে দেওয়ার পর আরেক দল বলতে শুরু করল, কেন তিনি ছাড়লেন? এ নাইট উপাধি ত্যাগে কি ভারত স্বাধীন হয়ে যাবে? মানুষের মনোজগৎ বড় অদ্ভুত। মানুষের ভিতরটা এখন প্রকাশ হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। চারপাশে চলা মানুষগুলো কতটা অসুস্থ, অশ্লীল, নোংরা, হিংসুটে, ঈর্ষাকাতর, ভন্ড বুঝতে ফেসবুকে নজর রাখুন। দেখবেন ফেসবুক লেখনীতে সবাই নিজের আসল চেহারা জানান দিচ্ছেন। কারও মানসিক বিকৃতি ও অসুস্থতা জানতে এখন মনোবিজ্ঞানীর কাছে খোঁজ নেওয়ার দরকার নেই। কিছুদিন একজনকে ফলো করলেও চরিত্রটা বেরিয়ে আসে। আগের দিনে কারও বিয়ের আগে পরিবারের খোঁজ নিতে অনেকে গোয়েন্দা লাগাতেন। এখন ফেসবুক পড়লে জানা যায় সবকিছু। মুখোশের আড়ালে মানুষ নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে না দীর্ঘ সময়। সময়মতো বেরিয়ে আসে আসল চরিত্র নিয়ে। ফেসবুক জমানা আমাদের অনেক কিছু শেষ করে দিচ্ছে। এখানে সম্পর্ক গড়তে ভাঙতে সময় লাগে না। মানুষের আবেগ-অনুভূতির একটা ডিজিটাল যুগ চলছে। সময়টা অনেক বেশি জটিল।  সমাজে কৃত্রিম মানুষের সংখ্যা বেশি। রাজনীতি, অর্থনীতি সবখানেই একটা অস্থির সময় পার করছি। মহামারীকালীন এ অস্থিরতা কোথায় গিয়ে ঠেকাবে জানি না।  মানুষের জীবনটা সব সময় এক রকম যায় না।
লেখক: সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২১

Related Keywords

Moscow ,Moskva ,Russia ,Bangladesh ,Amla ,Khulna ,India ,United Kingdom ,Amir Hussain ,Punjab ,Pakistan ,Comilla ,Chittagong ,British ,Alam Hanif ,Kazi Feroz Rashid ,Sheikh Hasina ,Radwan Ahmed ,Mirza Azam ,Tofail Ahmed ,Bahauddin Nasim ,Kamrul Islam Siddique ,Mosaddeque Ali Falu ,I Police ,Al League ,Development His ,Or National ,Facebook ,Salmanf Baby ,Silver Selim ,Country Run ,Page Not ,Where May ,Minister Kazi Feroz Rashid ,Political Prisoner ,Minister Amir Hussain Amu ,Ministry Run ,Mahbubul Alam Hanif ,They Country ,Long Will ,Success Kamrul Islam Siddique His ,Land State ,India Independent ,Being Social ,Facebook Writer ,Digital Age ,மாஸ்கோ ,மோசிக்குவா ,ரஷ்யா ,பங்களாதேஷ் ,ஆம்லா ,கூழ்ந ,இந்தியா ,ஒன்றுபட்டது கிஂக்டம் ,அமீர் ஹுசைன் ,பஞ்சாப் ,பாக்கிஸ்தான் ,கோமில்ல ,சிட்டகாங் ,பிரிட்டிஷ் ,ஆலம் ஹனிஃப் ,கேஸீ பேரோஜ் ரஷித் ,ஷேக் ஹசினா ,மியர்ஸ அஸாம் ,பஹாவுதீன் நாசிம் ,நான் போலீஸ் ,அல் லீக் ,ர் தேசிய ,முகநூல் ,நாடு ஓடு ,பொலிடிகல் ப்ரிஸநர் ,மஹபபுல் ஆலம் ஹனிஃப் ,நீண்டது விருப்பம் ,டிஜிட்டல் வாழ்நாள் ,

© 2024 Vimarsana

comparemela.com © 2020. All Rights Reserved.