comparemela.com

Card image cap


লকডাউনে বন্ধ আয়, বাধ্য হয়ে ধরেছেন রিকশার হাতল
মিনার মিজান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২১
ছবি: বাংলানিউজ
চট্টগ্রাম: মোশারফ ইসলাম। ১০ বছর ধরে আছেন চট্টগ্রামে।
দশ দিন আগেও সিএনজি অটোরিকশা চালাতেন তিনি। লকডাউনে উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে এখন পুরোদস্তুর রিকশাচালক।  
রিকশায় চলতে চলতে মোশারফের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলার জলডাঙা ইউনিয়নের বাসিন্দা তিনি। স্ত্রী ও তিন সন্তানের জনক মোশারফ চট্টগ্রামে আছেন গত দশ বছর ধরে। এই সময়ে তিন দফা পেশা পরিবর্তন করে শেষ চার বছর ধরে চালিয়েছেন সিএনজি অটোরিকশা। করোনায় দফায় দফায় লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় চতুর্থবারের মতো আবারও পরিবর্তন করতে হয়েছে যন্ত্রযান। বাধ্য হয়ে সিএনজি অটোরিকশা ছেড়ে ধরতে হয়েছে রিকশার হাতল।
মোশারফ জানান, বেশ কয়েকবছর ধরে চট্টগ্রামে আছি। কখনো রাজমিস্ত্রীর কাজ, কখনো হকার সহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করেছি। শেষ পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশা চালানো শিখলাম। গত চার বছর ধরে সেটিই চালিয়ে আসছিলাম। কিন্তু করোনার লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় আয়। আর্থিক অনটনে পড়ে শেষ পর্যন্ত রিকশা চালাচ্ছি। অনেকটা বেঁচে থাকার তাগিদেই।
তিনি বলেন, রংপুরে আমার পরিবার থাকে সেখানেও টাকা পাঠাতে হয়। আয় না করলে পরিবারের কাছে টাকা পাঠাবো কি করে? সামনে কোরবানির ঈদ। বাড়িতে যাওয়ার জন্য অন্তত কিছু টাকা তো যোগাড় করতে হবে। তাই  রিকশা চালাতে হচ্ছে পুলিশের ভয় উপেক্ষা করে, লাঠির আঘাত সহ্য করে।  
শুধু মোশারফ নন, এমন অনেকে আছেন নিজেদের পেশা পরিবর্তন করে করছেন অন্য কাজ। সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়ায় শেষ পর্যন্ত পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। রাস্তায় পণ্য বিক্রেতা, ফুটপাতে ফ্লাক্সের চা বিক্রেতা, ভ্যানে সবজি বিক্রেতা-এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। কেউ আয়া বা পরিচ্ছন্ন কর্মী ছিলেন বেসরকারি অফিসে। করোনা তাদের চাকরি কেড়ে নিয়েছে।
সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য প্রথম। তবে ভবিষ্যতে তা মোকাবিলায় সরকারের ভূমিকা পালন করতে হবে।  
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন মাহিম বাংলানিউজকে বলেন, বৈশ্বিক মহামারির কারণেই এমন দুরবস্থা। শুধুমাত্র ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এ সমস্যায় পড়েছে। আর্থিক অনটনে থাকা মানুষগুলোকে প্রণোদনার আওতায় আনা যেতে পারে। এছাড়াও সঠিক মনিটরিং প্রয়োজন এই কাজের জন্য।  
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের গভর্নর আমিনুল হক বাবু বাংলানিউজকে বলেন, করোনার এই মহাসংকট আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। এটি কঠিন বাস্তবতা। আর্থিক অনটনে শহরে টিকতে না পেরে অনেকে গ্রামে চলে যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ হতে হলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। বড় বড় করপোরেট গ্রুপ যদি নতুন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে তাহলে এ সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে।  
তিনি বলেন, জব সিকিউরিটি একটি বড় বিষয়। এটি নিয়ে কাজ করা এখন সময়ের দাবি। করোনায় অনেক ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মী ছাঁটাই করেছে। কিন্তু এ সুযোগের অপব্যবহার করে অনেক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানও এ কাজ করেছে। তাই সরকারকেই দায়িত্ব নিয়ে জব সিকিউরিটির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।  
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২১
এমএম/এসি/টিসি

Related Keywords

Bangladesh , , Chittagong University Sociology , Bangladesh Human Rights Commission Governor Mr , Musharraf Islam , Gen Musharraf Chittagong , Run Being , Government Introduction , Small , Bangladesh Human Rights Commission Governor , Babu Bangladesh , பங்களாதேஷ் , அரசு அறிமுகம் , சிறிய , பாபு பங்களாதேஷ் ,

© 2024 Vimarsana

comparemela.com © 2020. All Rights Reserved.