comparemela.com


শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩৭, ১ জুলাই ২০২১ |
আপডেট: ০৮:৪৩, ১ জুলাই ২০২১
A-
A+
‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শত বছর পূর্ণ করে আজ বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ১০১ বছরে পা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে অবদান রেখে চলছে। সেই সঙ্গে অবদান রাখছে শিক্ষা ও গবেষণায়।
ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনামলে জ্ঞানর্জনে পিছিয়ে ছিল পূর্ব বাংলা। এই অঞ্চলের অধিকাংশই ছিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। বাংলাভাষী এই অঞ্চলের মুসলমানদেরকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে প্রতিষ্ঠা করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যেটি পরবর্তীতে বাঙালির অধিকার আদায়ে বৃটিশবিরোধী আন্দোলন, বাংলা ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং সর্বোপরি ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয় আজ পূর্ণ করেছে একশ বছর।
মহামারি করোনার কারণে শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে সশরীরে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন রাখেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বিকেল ৪টায় ভার্চুয়ালি একটি আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।
১৯১১ সালে ব্রিটিশ ভারতে বঙ্গভঙ্গ রদের পর পূর্ববঙ্গের মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ প্রশমিত করতে ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা দেয় পূর্ববঙ্গের তত্কালীন রাজধানী ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। তত্কালীন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর একটি মহল বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করলেও নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯২১ সালের ১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে জাতি বিনির্মাণে ভূমিকা রাখে পূর্ববঙ্গের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বিশ্ববিদ্যালয়টি। শুধু জাতি গঠনই নয়, গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন সংগ্রামেও নেতৃত্ব দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
ব্রিটিশ এবং পরে পাকিস্তান আমলে এই অঞ্চলের মানুষ যে পিছিয়ে ছিল, সেই অসামঞ্জস্য দূর করার ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিল ঐতিহাসিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে ঔপনিবেশিক শাসনের শেষ দিকে। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২৭ বছর পর এদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়েছে। তখন এই অঞ্চল পশ্চাত্পদ ছিল। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম, যেটা পরে ঢাকায় পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়। তারপর ২৫ বছরের আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে পরিণত হলো। এই ঐতিহাসিক পরিস্থিতির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে ভূমিকা রেখেছে সেটা হলো, একদল উচ্চশিক্ষিত মানুষ তৈরি করেছে, যারা ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে ভূমিকা রেখেছেন।
শতবর্ষ আগে বিশ্ববিদ্যালয় যখন গঠন হয় তখন ৮৪৬ ছাত্রের সঙ্গে ছাত্রী ছিলেন মাত্র এক জন। তার নাম লীলা নাগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেন তিনি। শুরুর দিককার এসব ছাত্রীরা সমাজে একেকজন নারী শিক্ষার রোল মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। তাদের দেখে আরো মানুষ উত্সাহিত হয়েছেন, তারা নিজেরাও সমাজে নারী শিক্ষা বিস্তারে কাজ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এই জাতির যা কিছু মহৎ, যা কিছু উত্তম তার সবকিছুর পেছনের যে ভূমিকা তা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, একটি অসাম্প্রদায়িক, মানবিক, বুদ্ধিভিত্তিক আন্দোলনে, জাতীয়তাবাদী, গণতান্ত্রিক মূলবোধের বিকাশে সর্বোপরি একটি জাতির সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক গণতান্ত্রিক এই সব মূল্যবোধের লালনকেন্দ্রের উৎপত্তিস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এটিকে আবর্তন করেই জাতির সব বৃহত্তর অর্জনসমূহ, সব উন্নয়নের একটি শক্তিশালী নিয়মক ও অনুঘটক ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের সবই ইতিহাস এবং একসূত্রে গাঁথা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই দেশের, এই ভূখণ্ডের মানুষের উচ্চশিক্ষার পথটিকে সুগম করে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ইতিহাসে স্বর্ণোজ্জ্বল থাকবে সবসময়। আর একই সঙ্গে উচ্চশিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে এই দেশের মানুষের সচেতন করার ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তারই ফলশ্রুতিতে আমরা দেখেছি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম সর্বক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এগুলো ভবিষ্যতে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসবেন বা শিক্ষকতায় আসবেন তাদের জন্য সবসময় অনুপ্রেরণার অংশ হয়ে থাকবে।
এসএ/

Related Keywords

Bangladesh ,United Kingdom ,Pakistan ,British ,Sheikh Mujibur Rahman ,Leela Roy ,S Arefin Siddique ,University Introduction ,University Her ,University Political ,East Bengal ,United Kingdom India ,West Bengal ,University When ,Her Name Leela Roy ,Bangladesh State ,Mujibur Rahman ,Higher Education ,Pioneer Introduction ,பங்களாதேஷ் ,ஒன்றுபட்டது கிஂக்டம் ,பாக்கிஸ்தான் ,பிரிட்டிஷ் ,ஷேக் முஜிபூர் ரஹ்மான் ,லீலா ராய் ,பல்கலைக்கழகம் பொலிடிகல் ,கிழக்கு பெங்கல் ,ஒன்றுபட்டது கிஂக்டம் இந்தியா ,மேற்கு பெங்கல் ,பங்களாதேஷ் நிலை ,முஜிபூர் ரஹ்மான் ,அதிக கல்வி ,

© 2025 Vimarsana

comparemela.com © 2020. All Rights Reserved.