বহুমাত্রিক সায়ীদ স্যার
বহুমাত্রিক সায়ীদ স্যার
শুভ কিবরিয়া
২৬ জুলাই ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সায়ীদ স্যারের ৮২ বছরের জীবন ফুলে ও ফলে বিকশিত, কর্মে ও স্বপ্নে পূর্ণ।
এই অতিমারির সময়েও একটা বড় আনন্দের সংবাদ-গতকাল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার ৮২ বছর পার করে ৮৩ বছরে পা দিয়েছেন। আমাদের সৌভাগ্য, সায়ীদ স্যারের কারণেই আমরা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গ পেয়েছি। আবার সায়ীদ স্যারের মতো জীবনবাদী, স্বপ্নপ্রবণ, হৃদয় জাগানিয়া মানুষের ভালোবাসা ও স্নেহ পেয়েছি।
কয়েক দশকেরও বেশি সময়জুড়েই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বহু মানুষের জন্য এক আত্মিক প্রেরণার জায়গা হয়ে উঠেছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অবকাঠামোগত বাহ্যিক একটা চেহারা দাঁড়িয়েছে বটে; কিন্তু এর আত্মিক চেহারাটা খুবই অশরীরী। যে যার মতো করে অনুভব করে। আবার সায়ীদ স্যারের সঙ্গে বহু মানুষের বহুবিধ সম্পর্কও একটা অবয়ব নিয়ে দাঁড়িয়েছে। পৃথিবীর বহু প্রান্ত থেকেই বহু নারী, পুরুষ মনে করেন তার সঙ্গেই স্যারের সম্পর্কটা বোধহয় সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ। আমাদের যুগে এরকম বহুমাত্রিক ভালোবাসা জাগিয়ে তা সজীব রাখার রসায়ন জানা মানুষ শুধু বিরলই নয়, অনন্যও। সায়ীদ স্যার অসম্ভব গুণগ্রাহী মানুষও বটে। সারা জীবনে তিনি যত কর্মকাণ্ড করেছেন, সবখানেই এই গুণগ্রাহিতার ছোঁয়া পাওয়া যায়।
দুই.
২০০৪ সালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এবং সায়ীদ স্যারের জীবনে একটা বড় ঘটনা ঘটে। স্যার সে বছর ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পান। স্যারের কাজকে স্বীকৃতি দিয়ে এই পুরস্কার ঘোষণাকালে ম্যাগসাইসাই ফাউন্ডেশন আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, ‘In electing Abdullah Abu Sayeed to receive the 2004 Ramon Magsaysay Award for Journalism, Literature, and Creative Communication Arts, the board of trustees recognizes his cultivating in the youth of Bangladesh a love for books and their humanizing values through exposure to the great works of Bengal and the world.’
এ পুরস্কার গ্রহণকালে ফিলিপাইনের ম্যানিলায় নানা অনুষ্ঠানে স্যারকে আলোকিত মানুষ গড়ার এই প্রচেষ্টার অবয়ব তুলে ধরতে হয়। চিরায়ত শুভ মূল্যবোধ ছাড়া, বড় হৃদয়ের মানুষ ছাড়া যে বড় জাতি তৈরি হয় না এবং সেটি না হলে যে সমষ্টির কল্যাণধর্মী একটা রাষ্ট্র দাঁড় করানো যায় না-স্যারের এই কথা সেখানকার দর্শক-শ্রোতাদের খুব গভীরভাবেই স্পর্শ করে। পুরস্কার গ্রহণের দিন আনুষ্ঠানিক বক্তৃতায় সায়ীদ স্যার খুব সুস্পষ্টভাবেই উল্লেখ করলেন, ‘Little minds and great nations cannot go together. Consequently, our aspiration for greatness as a nation must be matched by our commitment to create enlightened people within the nation. And therefore, our endeavor is to create for Bangladesh an informed, enriched and committed generation of future citizens. In this, our focus has been on the youth.’