comparemela.com


online@the-nail-gallery-mallorca.com : zoebartels80876 :
বহু কৃতীর স্মৃতিতে উজ্জ্বল : শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় » www.dinajpur24.com "যেখানে ঘটনা সেখানেই আমরা"
রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১, ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন
Toggle navigation
শিরোনাম :
দৃষ্টি আকর্ষণ-ঘোষণা
আপডেট সময়:
শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১
১৫
ঐতিহ্য: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল। ছবি : উইকিমিডিয়া কমনস।
(দিনাজপুর২৪.কম) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের শুভলগ্নে মনে আসে তিন কৃতী ছাত্রের নাম। বাংলা কবিতায় তাঁদের বিশিষ্ট স্থান— অজিত দত্ত, বুদ্ধদেব বসু ও কিরণশঙ্কর সেনগুপ্ত। তাঁরা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা এবং ইংরেজি বিভাগের মেধাবী ছাত্রই নন, তাঁদের স্মৃতিলেখায় ভাস্বর হয়ে আছে যৌবনের প্রিয় বিদ্যাপীঠ।
অজিত দত্তের জন্ম ঢাকার বিক্রমপুরে। কিশোরীলাল জুবিলি স্কুল ও জগন্নাথ কলেজ থেকে আইএ পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন ১৯২৬ সালে। বি এ (অনার্স) ও এম এ, উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থানাধিকারী অজিত দত্ত ছাত্রজীবনেই বন্ধু বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে মিলে প্রগতি পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন। কুসুমের মাস, পাতাল কন্যা, ছায়ার আলপনা-র মতো স্মরণীয় কবিতাগ্রন্থের কবি ছাত্রজীবন শেষে কলকাতায় থিতু হলেও, সব সময় স্মরণে রেখেছেন ফেলে আসা শহর ও বিশ্ববিদ্যালয়কে। ‘আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি’ শীর্ষক স্মৃতিগদ্যে উদ্ভাসিত গাছতলা, চায়ের দোকান, বন্ধুদের সঙ্গে বেশুমার আড্ডা: “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়িটির ভিতরে কোন খাবার বা চায়ের দোকান ছিল না। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি বাজারে পরিণত হয়নি। বিস্তীর্ণ মাঠের এক প্রান্তে একটি ছোট্ট কুটিরে ছিলো আদিত্যের চায়ের দোকান। টিনের চালের ঘরের ভিতর গোটা দুই লম্বা টেবিল ও গোটা চারেক লম্বা লম্বা বেঞ্চি ছিল। সে দোকানে খাদ্য দ্রব্যও খুবই অল্প থাকতো। কিছু আদিত্যের তৈরি সন্দেশ, কখনো ডিম আর বোধ হয় এক রকম বিস্কুট। সেই আদিত্যের দোকানে ছিলো আমাদের আড্ডা। আমরা ওর দোকান ঘরে বসতাম না। দোকানের সামনে গাছতলায় আমরা বন্ধুরা গোল হয়ে বসে চা আর সিগারেট সহযোগে প্রচুর আড্ডা দিতাম। সে আড্ডা শুধু সাহিত্যিক আড্ডা ছিলো না। নানা রকম গল্পগুজব হতো। পরিমল রায় মজার মজার ছড়া বানাতো মুখে মুখে। প্রতিদিন ক্লাস শেষ করে আমি ও অমলেন্দু বসু বুদ্ধদেবের পুরোনো পল্টনের বাড়িতে হাজিরা দিতাম। ঢাকার ‘প্রগতি’ পত্রিকার প্রকাশক বুদ্ধদেবকে ঘিরে বন্ধু-বান্ধবের আড্ডাখানা জমে উঠেছিল। কলকাতার ‘কল্লোল’-এর আড্ডারও একটা আকর্ষণ ছিলো, তবু প্রধানত, অন্তরঙ্গ বন্ধুগোষ্ঠী ঢাকাতে। কারণ ঢাকা আমার জন্মস্থান।” (ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্মারকগ্রন্থ)
অজিত দত্তের মতোই বুদ্ধদেব বসুও ঢাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাতর স্মৃতিবাহক। তাঁরও জন্ম পূর্ববঙ্গে। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল ও ঢাকা সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে যথাক্রমে প্রবেশিকা ও আই এ পাশ করে ১৯২৭-এর জুলাইয়ে ভর্তি হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। আমার যৌবন স্মৃতিগ্রন্থে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর সতীর্থ ও সহপাঠী ছিলেন অজিত দত্ত, অমলেন্দু বসু, পরিমল রায়। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আলো করে রেখেছিলেন রমেশচন্দ্র মজুমদার, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, সুশীলকুমার দে, মোহিতলাল মজুমদারের মতো গুণী শিক্ষকেরা। ১৯৩০-এ বি এ (অনার্স) এবং ১৯৩১-এ এম এ, উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী বুদ্ধদেবের কর্মজীবন এবং পরবর্তী খ্যাতকীর্তি সাহিত্যজীবন কলকাতায় অতিবাহিত হলেও ঢাকা শহর ও বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর স্মৃতি ও সৃষ্টিতে ছিল সতত জাগরূক সত্তাস্বরূপ। এরই সাক্ষ্য ১৯৪১-এ ঢাকা বেতারের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পঠিত ‘আবছায়া’ শীর্ষক কথিকা: “আই.এ. পাশ ক’রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেদিন ভর্তি হলাম সে দিন মনে ভারি ফুর্তি হ’লো। বাস রে, কত বড়ো বাড়ি! করিডরের এক প্রান্তে দাঁড়ালে অন্য প্রান্ত ধূ-ধূ করে। ঘরের পরে ঘর, জমকালো আপিশ, জমজমাট লাইব্রেরি, কমনরুমে ইজিচেয়ার, তাসের টেবিল, পিংপং, দেশ-বিদেশের কত পত্রিকা—সেখানে ইচ্ছেমতো হল্লা, আড্ডা, ধূমপান সবই চলে, কেউ কিছু বলে না। কী যে ভালো লাগলো বলা যায় না। মনে হ’লো এতদিনে মানুষ হলুম, ভদ্রলোক হলুম। এত বড়ো একখানা ব্যাপার— যেখানে ডীন আছে, প্রভষ্ট আছে, স্টুয়র্ড আছে, আরো কত কী আছে, যেখানে বেলাশেষে আধ মাইল রাস্তা হেঁটে টিউটরিয়াল ক্লাশ করতে হয়, তারও পরে মাঠে গিয়ে ডনকুস্তি না করলে জরিমানা হয়, যেখানে আজ নাটক, কাল বক্তৃতা, পরশু গান-বাজনা কিছু-না-কিছু লেগেই আছে। রমনার আধখানা জুড়ে যে-বিদ্যায়তন ছড়ানো, সেখানে আমারও কিছু অংশ আছে, এ কি কম কথা!”
১৯২১-এ প্রতিষ্ঠার ঠিক এক দশক পর প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় ও শহর ছেড়ে কলকাতায় থিতু হন বন্দীর বন্দনা-র কবি। আকাশবাণী কলকাতা থেকে প্রচারিত ‘ভাব-বিনিময়’ শিরোনামের এক লেখার নিবিড় পাঠে অনুধাবনে আসে তাঁর জীবনে কতটা প্রভাবসঞ্চারী ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়: “আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হয়েছিলাম উনিশ-শো সাতাশ সালে। উনিশ-শো একত্রিশে এম.এ. পাশ করে কলকাতায় চলে আসি। এই চার বছরে আমি মনের দিক থেকে এমন বেগে বেড়ে উঠেছিলাম যে পরে ভাবলে মনে হয়েছে যেন মাত্র চার বছরের ব্যাপার নয়, যেন আমার জীবনের সেই অধ্যায় অনেক বেশি দীর্ঘ। যেন কানায়-কানায় ঘটনায় ভরা, প্রতিটি দিন কোনো-না-কোনো অভিজ্ঞতায় আন্দোলিত।”
বুদ্ধদেবের স্মৃতিতে বটেই, তাঁর কবিতা ও কথাসাহিত্যেও শহর ও বিশ্ববিদ্যালয় এসেছে প্রসঙ্গ-অনুষঙ্গ হয়ে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কালে, ৪ এপ্রিল ১৯৭১ আনন্দবাজার পত্রিকা-য় প্রকাশিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ১৯২৮’ কবিতায় আছে পাকিস্তানি হানাদারদের ধ্বংসযজ্ঞের শিকার তাঁর প্রিয় বিদ্যাপীঠ নিয়ে কাতর ভাবনা ও স্মৃতিমেদুরতা: “আমরা ব’সে আছি গোল হ’য়ে ঘাসের উপর, চা খাচ্ছি,/ আমাদের হাসির শব্দে উড়ে যায় যেন পাখির ঝাঁক,/ জীবনটাকে মনে হয় এক উৎসব।/ আর আজ শুনছি বিধ্বস্ত সেই বিদ্যাপীঠ।”
বুদ্ধদেবের দশ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন কিরণশঙ্কর সেনগুপ্ত। তাঁরও জন্ম ঢাকাতেই, পড়াশোনাও। সোমেন চন্দের আহ্বানে ‘প্রগতি লেখক সংঘ’-এ যোগদান। পঞ্চাশের দশকে কলকাতা পাড়ি দেওয়ার আগে কর্মজীবনেরও কিছু কাল কাটান ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে। স্বপ্ন বাসনা, স্বর ও অন্যান্য কবিতা, ছায়া হেঁটে যায়-এর কবি কিরণশঙ্কর সেনগুপ্তের স্মৃতিতে সমুজ্জ্বল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার: “রেস্তরাঁ বা গাছতলায় আড্ডা জমতো ছাত্রদের। আমার নিজের আশ্রয় ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি, সেখানে নিবিড় এক সর্বব্যাপ্ত স্তব্ধতার মাঝে ছাত্র-ছাত্রীরা নোট টুকছেন। টেবিলের ওপর ছড়ানো বহু পত্র-পত্রিকার অধিকাংশই ইংরেজি ও বাংলা, ঝকঝকে তকতকে। কোনো কোনোটি বিদেশ থেকে সদ্যপ্রেরিত। সাহিত্য ভালোবাসতুম বলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নিবিড় পরিবেশে আমি মগ্ন হয়ে যেতাম, ডুবে যেতাম, এক এক সময়। মনে পড়ছে টি.এস.এলিয়ট তখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তভুর্ক্ত হন নি; এই লাইব্রেরিতে এসেই তখন তাঁর জটিল কবিতার সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটেছিল।” (চল্লিশের দশকের ঢাকা)
ইংরেজির ছাত্র কিরণশঙ্কর স্পেশাল বাংলা ক্লাসে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছেন বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কবি মোহিতলাল মজুমদারকে। ১৯২৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগে অধ্যাপনা শুরু স্বপন পসারী, বিস্মরণী, স্মরগরল কাব্যের কবি মোহিতলালের। তাঁর অসাধারণ ক্লাসে বিভাগ-বহির্ভূত শিক্ষার্থীদের আনাগোনার তথ্য দিচ্ছেন কিরণশঙ্কর সেনগুপ্ত: “স্পেশাল বাংলা ক্লাসে প্রথম বছরেই যাঁর মুখোমুখি হলাম তিনি আজকের বাংলা সাহিত্যের একজন ব্যক্তিত্ব- মোহিতলাল মজুমদার। সাহিত্যের একজন জিজ্ঞাসু ছাত্র হিসেবে আমি দু’বছর তাঁর কাছে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম এবং এই দু’বছরের মধ্যেই প্রধানত তাঁর বক্তৃতা ও আলোচনা আমার সাহিত্যবিচারের পরিধি ও রসবোধকে ব্যাপকতর করতে যথেষ্ট সাহায্য করেছিল। মোহিতলাল যখন ক্লাসে পড়াতেন, তখন ছাত্র-ছাত্রীরা একাগ্রচিত্তে শুনতেন, বেলাইনের ছাত্ররাও অর্থাৎ কমার্স-এর ছাত্র, বিজ্ঞানের ছাত্ররাও অনেক সময় এসে বসতেন নিঃশব্দে পেছনের বেঞ্চিতে, তাঁর বক্তৃতা শোনার জন্যে।”
এমন সব শিক্ষার্থীর স্মৃতিতে জাগরূক, কৃতি-তে উজ্জ্বল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১ জুলাই ২০২১ পূর্ণ করল প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর। শুভ শতবর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়! —
সৌজন্যে: আনন্দবাজার পত্রিকা
দোয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন.

Related Keywords

Ramna ,Jharkhand ,India ,Bengali ,Bangladesh General ,Bangladesh ,Narayanganj ,Dhaka ,Calcutta ,West Bengal ,Bihar ,Pakistan ,Buddhadeb Bosu ,Anandabazar Patrika ,Mohitlal Majumdar ,Ramesh Chandra Majumdar ,Ajit Dutt ,Satyendra Nath Bose ,Ajit Dutta ,Dhaka College ,Kishorilal Jubilee School ,University House ,University His ,University Library ,University Light ,University Bengali ,University Bengalie English ,University English ,Jagannath College ,Jubilee School ,Buddha Basu ,Student Life ,Bose Buddha ,Ajit Dutt As Buddha ,Bus Ray ,Oracle Calcutta ,April Wired ,Pakistan Raiders ,Available May ,Special Bengali ,Start Swapan ,His Extraordinary ,ரம்னா ,ஜார்கண்ட் ,இந்தியா ,பெங்காலி ,பங்களாதேஷ் ,நாராயங்கஞ்ச் ,டாக்கா ,கால்குட்டா ,மேற்கு பெங்கல் ,பிஹார் ,பாக்கிஸ்தான் ,ஆனந்தபஜார் பத்திறிகா ,ரமேஷ் சந்திரா மஜும்தார் ,அஜித் தத் ,சத்யேந்திரா நாத் போஸ் ,அஜித் தத்தா ,டாக்கா கல்லூரி ,பல்கலைக்கழகம் வீடு ,பல்கலைக்கழகம் அவரது ,பல்கலைக்கழகம் நூலகம் ,பல்கலைக்கழகம் ஆங்கிலம் ,ஜெகந்நாத் கல்லூரி ,ஜூபிலி பள்ளி ,மாணவர் வாழ்க்கை ,கிடைக்கிறது இருக்கலாம் ,

© 2024 Vimarsana

comparemela.com © 2020. All Rights Reserved.