comparemela.com


তবুও শান্তি তবু আনন্দ
ছবি: সংগৃহীত
আসিফুর রহমান সাগর০৫:৪৯, ২০ জুলাই, ২০২১ | পাঠের সময় : ২.৬ মিনিট
নিয়ম মতো সবকিছুই হবে। ঈদের জামাতে নামাজ পড়া শেষে কোরবানি দেওয়া। বাসায় রান্না আর আত্মীয় বাড়িতে মাংস দেওয়া। সবকিছু থাকলেও যেন বাঙালির ঈদের সেই আনন্দ থাকবে না ঘরে ঘরে। বাস টার্মিনাল, লঞ্চ টার্মিনাল সবখানেই ঘরে ফেরা মানুষের ভিড়। কিন্তু মনে সেই আনন্দ নেই মানুষের। দেড় বছরেরও বেশি সময়কাল ধরে করোনা মহামারির সঙ্গে লড়াই করছে বিশ্বের মানুষ।
বাংলাদেশও গত দেড় বছরের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময় কাটাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু শনাক্তের রেকর্ড হচ্ছে। প্রতিদিনই আগের দিনের চেয়ে মৃত্যু বাড়ছে, বাড়ছে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। আত্মীয়-বন্ধু, পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিউজ ফিড ভরে উঠেছে মৃত স্বজনদের ছবিতে। শোক, শঙ্কা আর করোনা মহামারির আতঙ্ক নিয়েই এবার পালিত হবে ঈদ। অনেকের কাছেই ঈদ হবে নিরানন্দের। স্বজন হারানোর বেদনায় মোড়া।
এই মহামারি সময়কালের ঈদে তাই মানুষকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। সবাই মিলে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় সেই মন্ত্রই যেন উচ্চারিত হয়েছে :
‘শুধু আপনারে বাঁচায় যে/ মুসলিম নহে ভণ্ড সে/ ইসলাম বলে বাঁচ সবাই /
দাও কুরবানি জান ও মাল/ বেহেশত তোমার কর হালাল/ স্বার্থপরের বেহেশত নাই।’ (শহীদী ঈদ)
ঈদ তো শুধু আনন্দ উপলক্ষ্য নয় বাঙালি মুসলমানের কাছে এটা এক ধরনের মিলনমেলাও। ঈদ এলেই মানুষের বাড়ির টানের তীব্রতা চোখে ধরা পড়ে বেশি। সীমাহীন যানজট উজিয়ে, বেশি ভাড়া গুনে, পথের নিদারুণ কষ্ট সহ্য করে সবাই ফিরতে চায় তার ফেলে আসা স্মৃতিগন্ধমাখা বাড়িতে, প্রিয় মানুষগুলোর কাছে। এবার অনেকে বাড়ি ফিরলেও করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আর করোনা থেকে বাঁচতে অদৃশ্য দূরত্ব থাকবে। ফলে বাসায় বাসায় সবাই মিলে যে আনন্দ করে ঈদ উদ্যাপন তা থাকবে না। রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলো তো রয়েছেই দেশের বিভিন্ন জেলাগুলোতেও করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। মৃত্যুর খবরে ভরে উঠছে খবরের কাগজের পাতা। এত মৃত্যুর মাঝে ঈদের আনন্দ অনেকটাই ম্লান হয়ে যাবে।
ঈদের পরেই লকডাউন শুরু হবে বলে অনেকেই বাড়ি যাচ্ছেন না। মফস্সলে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরিবারের অন্য সদস্যদেরও পাঠাচ্ছেন না। তাই এবারের ঈদ রং হারিয়েছে অনেকখানিই।
কোরবানির ঈদে যদিও পোশাক কেনার খুব একটা তোড়জোড় থাকে না তারপরেও পাঞ্জাবি ও মেয়েদের শাড়ি সালোয়ার কামিজের বিক্রি একেবারে কম হয় না। এবার সেটাও খুব কম। মার্কেট, শপিং মলগুলো ফাঁকা। বিক্রি খুব কম। কেনাকাটায় মানুষের আগ্রহও কম দেখা গেছে।
কামরুল আনাম নান্নু প্রতি বছর সপরিবারে ঈদে বাড়ি যান। তিনি জানালেন, তাদের ঈদ উদ্যাপন রং হারিয়েছে অনেক আগেই। ২০০০ সাল থেকে ঢাকায় তারা দুই ভাই থাকেন। প্রতি বছর দুই ঈদেই ভাই, স্ত্রী, বাচ্চা সবাইকে নিয়ে বাড়ি যান তারা। অন্য দুই ভাই চাকরি করেন ভিন্ন জেলায়। তারাও চলে আসেন। ঈদকে ঘিরে পারিবারিক মিলনমেলা বসে বাড়িতে। এবার তা হচ্ছে না।
এবারের ঈদ তাই হয়ে উঠবে অনেকটাই ভার্চুয়াল ঈদ উদ্যাপন। চাকরি বা ব্যবসার কারণে যে যেখানে থাকে সেখানেই এবারের ঈদ। সেই ঈদও কাটবে বাড়ির চার দেওয়ালের ভেতরেই। সবাই ঈদের দিন সেল ফোনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও কল করেই সারবেন ঈদে প্রিয়জনের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পালা। কিংবা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমে চলবে গ্রুপ আড্ডা। করোনাকাল আমাদের ঘরবন্দি করে দিয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তির কল্যাণে বাড়ি না যেতে পারার কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে। দেখা হবে ভিডিও কলে। করোনাকালে এতেই খুঁজে নিতে হবে ঈদের আনন্দ।
ইত্তেফাক/আরকে

Related Keywords

Bengali , Bangladesh General , Bangladesh , Bengalis Eid , , Center Eid , Yet Peace , May Bengalis Eid , Bus Terminal , Kazi Shoes Islam , Bengali Muslim , October Eid , Kamrul Anam Nanu , Eid Celebration , Virtual Eid Celebration , பெங்காலி , பங்களாதேஷ் , பேருந்து முனையத்தில் , பெங்காலி முஸ்லீம் , எய்ட் கொண்டாட்டம் , மெய்நிகர் எய்ட் கொண்டாட்டம் ,

© 2024 Vimarsana

comparemela.com © 2020. All Rights Reserved.