comparemela.com


গ্রামে ছুটছে মানুষ
সব মহাসড়কেই যানবাহনের চাপ, কোথাও তীব্র যানজট রাতে লঞ্চ ছাড়লেও সকাল থেকে ডেক দখল যাত্রীদের গরুবাহী ট্রাকের কারণে রাজধানীতে যানজট বেড়েছে
কঠোর লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় দিন গতকালও গ্রামমুখী মানুষের ঢল অব্যাহত ছিল। শিমুলিয়া ঘাট জুড়ে ছিল দীর্ঘ যানজট। ছবি: আব্দুল গনি
পিনাকি দাসগুপ্ত০৭:৩৬, ১৭ জুলাই, ২০২১ | পাঠের সময় : ৩.৭ মিনিট
বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংক্রমণের কারণে দুই সপ্তাহের লকাডাউন শেষে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল। গতকাল শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে যাত্রীর চাপ কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সংক্রমণের ঝুঁকির মুখেও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে অনেকেই রাজধানী ছাড়ছেন। আবার অনেকেই বাস কাউন্টার-গুলোতে ভিড় করছেন ঈদের আগের দুদিনের টিকিটের জন্য। এর ফলে সব মহাসড়কেই যানবাহনের চাপ তৈরি হয়েছে, কোথাও তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট। গরুবাহী ট্রাকের কারণে রাজধানীতে বেড়েছে যানজট। এছাড়া রাতে লঞ্চ ছাড়লেও সকাল থেকে ডেক দখল করছে যাত্রীরা।
শুক্রবার সকাল থেকে গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, ছুটির দিন হওয়ায় টার্মিনালে যাত্রীর চাপ রয়েছে। কাউন্টারগুলোর সামনে বাসের অপেক্ষা করছেন ইতিমধ্যে টিকিট সংগ্রহ করা যাত্রীরা। তাদের অধিকাংশের মুখেই মাস্ক দেখা গেছে। আবার অনেক যাত্রী ঈদের দুদিন আগের টিকিটের প্রত্যাশায় কাউন্টারগুলোতে ভিড় করছেন।
বাস টার্মিনালে অপেক্ষারত বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঝুঁকি নিয়ে গ্রামে যাচ্ছেন ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে। এদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা বিভিন্নভাবে, এমনকি ভেঙে ভেঙে গ্রামে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গণপরিবহন ছেড়ে দেওয়ায় তাদের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে।
শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার আলমগীর বলেন, আমাদের পরিবহনের আগাম টিকিট বেশি বিক্রি হচ্ছে। ঈদের একদিন আগে টিকিট নাই বললেই চলে। ১৯ এবং ২০ তারিখের টিকিটের চাহিদাই বেশি।
বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ
যাত্রাবাড়ী এলাকাতে দেখা গেছে রজনীগন্ধা, মালঞ্চ পরিবহন ও বিআরটিসির বিভিন্ন পরিবহনে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাসে আগে ওঠা যাত্রীরা। গতকাল সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কোথাও ট্রাফিক পুলিশ বা সার্জেন্টকে বাধা দিতে বা মামলা করতে দেখা যায়নি।
এ ব্যাপারে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, আমরা মালিক-শ্রমিকদের বলেছি যাতে তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন। যারা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে যেন পুলিশ ব্যবস্থা নেয় সে জন্য প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানিয়েছি। এখন কোন বাস কোন এলাকায় অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছে, সেটা তো দেখতে পারছি না। অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে যাতে বাসে না ওঠে সেজন্য যাত্রীদেরও অনুরোধ করছি আমরা।
গরুবাহী ট্রাকের চাপ রাজধানীতে
আসন্ন কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরুবাহী ট্রাক রাজধানীতে প্রবেশ করছে। অন্যদিকে ঈদের ছুটিতে রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছে মানুষ। গরুবাহী ট্রাক ও ঘরমুখী মানুষের চাপে গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে তীব্র যানজট চোখে পড়ে, যা উত্তরা পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে। ফলে এই সড়কে থেমে থেমে চলতে হয়েছে পরিবহনগুলোকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঘরমুখী অতিরিক্ত গাড়ির চাপে বনানী ফ্লাইওভার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বনানী ফ্লাইওভার থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এই যানজট থাকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায় বন্ধ
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দুর্ঘটনা ও পরিবহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দফায় দফায় বন্ধ ছিল সেতুর টোল আদায়। এতে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর পুংলী এবং সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে সিরাজগঞ্জ সড়ক পর্যন্ত পরিবহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয় বৃহস্পতিবার রাত ২টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত। এমন চাপ দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদও অব্যাহত ছিল।
বঙ্গবন্ধু সেতু সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ পরিবহন মহাসড়কে চলাচল করায় কোথাও কোথাও যানজটসহ ধীরগতিতে চলে পরিবহন। এই পরিস্থিতিতে দফায় দফায় সেতুতে টোল আদায় বন্ধ রাখে সেতু কর্তৃপক্ষ। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, মহাসড়কে পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে।
লঞ্চ ছাড়বে রাতে, সকালেই ডেক দখল যাত্রীদের
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের ওষুধ কোম্পানির কর্মচারী হারুনুর রশীদ। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ৩টায় গাজীপুরের রাজাবাড়ী এলাকা থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা হন। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সদরঘাটে পৌঁছানোর আশা করলেও তা পারেননি। রাস্তায় যানজটের কারণে রাত ১০টায় সদরঘাটে পৌঁছান। ঘাটে এসে দেখেন ভোলার সব লঞ্চ ঘাট থেকে ছেড়ে গেছে। স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ওয়েটিং রুমে রাত কাটে তার। গতকাল সন্ধ্যায় লঞ্চে উঠবেন। তবে আগে থেকেই লঞ্চে উঠে বসে আছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘাটে সারিবদ্ধভাবে বিভিন্ন রুটের লঞ্চ ভিড়িয়ে রাখা হয়েছে। বিকালে বা সন্ধ্যায় লঞ্চ ছাড়ার সম্ভাব্য সময় নির্ধারিত থাকলেও সকাল থেকেই শত শত যাত্রী সদরঘাটে এসে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের লঞ্চের ডেকে আগাম জায়গা দখল করে চাদর বিছিয়ে বসে আছেন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে ট্রেন
সরেজমিনে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্য সকাল থেকে স্টেশনে আসতে শুরু করে যাত্রীরা। সামাজিক দূরত্ব বজায় না থাকলেও কম বেশি সবাই মাস্ক ব্যবহার করে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারির ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সঠিক সময়ে চলাচল করেছে প্রতিটি ট্রেন।
স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, লাইন ধরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক যাত্রীর তাপমাত্রা পরিমাপ করা হচ্ছে। বিনা মাস্কে কোনোভাবেই কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারছে না। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।
ইত্তেফাক/বিএএফ

Related Keywords

Uttara ,Rangpur ,Bangladesh ,Sadarghat ,Chittagong ,Dhaka ,M Masud Sarwar ,Harun Rashid ,Yasser Arafat ,Kh Inayat Ullah ,Eid Center ,Police Law ,Many Bus ,Badam Bus Terminal ,Bus Terminal Pending ,Editor Kh Inayat Ullah ,May Police Law ,Airport Road ,Bridge West ,Sirajganj Road ,Elenga Highway Police ,Lincoln Express Station ,உத்தாரா ,ரங்க்பூர் ,பங்களாதேஷ் ,சிட்டகாங் ,டாக்கா ,ஹருன் ரஷித் ,ய்யாஸர் அராபத் ,போலீஸ் சட்டம் ,விமான சாலை ,பாலம் மேற்கு ,

© 2025 Vimarsana

comparemela.com © 2020. All Rights Reserved.