comparemela.com


Home / সারাদেশ / অক্সিজেনের অভাবে ছেলের সামনেই প্রাণ গেল মায়ের!
অক্সিজেনের অভাবে ছেলের সামনেই প্রাণ গেল মায়ের!
বরিশাল নগরীর পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা রানু বেগমের (৫০) এর তীব্র শ্বাসকষ্ট থাকায় মঙ্গলবার দুপুর ২টায় নিয়ে আসা শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। রেনু বেগমের শ্বাসকষ্ট তীব্রতর হলে চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত অক্সিজেন দেওয়ার সুপারিশ করেন।
সেই অনুযায়ী করোনা ওয়ার্ডে গিয়ে রানু বেগমের ছেলে আল আমিন ও দেবরের ছেলে মাইনুল দুই জনেই ছুটে চলেছে অক্সিজেন সিলিন্ডার সংগ্রহের জন্য। তারা দুইজন একতলা, দুই তলায়, তিন তলায় নার্স, ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে ছুটছেন অক্সিজেনের জন্য। কিন্তু তাদের কাছে অক্সিজেন থাকলেও রানু বেগমের জন্য একটি সিলিন্ডার তারা দেয়নি।
পরে অনেকটা নিরুপায় হয়ে অক্সিজেনের জন্য লাইনে দাঁড়ায় তারা। এদিকে সময় যত অতিক্রম হচ্ছে রানু বেমের অবস্থা ততই অবনতির দিকে যাচ্ছে। আর বিকেল পৌনে ৫টায় মায়ের জন্য যখন ছেলে হাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছায়, ততক্ষনে মা রানু বেগম হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে চিরতরের জন্য দম হারিয়ে ফেলেছেন!
মৃত্যু রানু বেগেমের ছেলে অভিযোগ করে বলেন, সময়মত একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার পেলে হয়তো আমার মা বেঁচে উঠতেন। করোনা ওয়ার্ডে ওয়ার্ড মাস্টার, কর্তব্যরত সেবিকাদের খামখেয়ালীপনা এবং অর্থ লিপ্সার কারণে মাকে চিরতরের জন্য হারিয়ে ফেললাম। এ জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবী জানাই।
রানু বেগমের স্বজনরা জানায়, বেশ কয়েক দিন ধরে রানু বেগম করোনা উপসর্গ নিয়ে বাসায় চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। গতকাল সকালে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে প্রথমে শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানের চিকিৎসকরা তাকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে আক্সিজেন দেওয়ার জন্য বলেন এবং করোনা ইউনিটে পাঠান।
রানু বেগমের ছেলে মাকে করোনা ইউনিটের সামনে ট্রলিতে রেখে প্রথমে দ্বিতীয় তলায় থাকা ওয়ার্ড মাস্টার মশিউর রহমানের কাছে ছুটে যান। ওয়ার্ড মাস্টার তাদের তৃতীয় তলায় ওয়ার্ডে কর্মরত সেবিকাদের কাছে পাঠান। দায়িত্বরত সেবিকারা অক্সিজেনের ব্যবস্থা না করে তাকে পুনরায় পাঠান ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে। এ সময়ে ওয়ার্ড মাস্টার রানু বেগের ছেলের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। রোগীর অবস্থা খারাপে দিকে যাওয়ায় একটি সিলিন্ডারের জন্য আকুতি জানালে তিনি অশ্রাব্য ভাষায় গালিাগালি করেছেন। অক্সিজেন সিলিন্ডার পেতে হলে ৫০০ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করেন। না হয় নিচতলায় লাইনে দাঁড়িয়ে অক্সিজেন সংগ্রহের জন্য বলেন।
নিরুপায় রানুর ছেলে আল আমিন ও ভাসুর ছেলে মাইনুল দীর্ঘ লাইন দঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল। এদিকে সময় গড়ানোর সাথে সাথে রানু বেগম ও আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পড়েন। পরে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে যখন রানু বেগমের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার হাতে পায় ছেলে, ঠিক সেই সময়ে রানু বেগমের শ্বাসযন্ত্র চিরতরে জন্য বন্ধ হয়ে যায়। ছেলে হাতে কাঙ্খিত অক্সিজেন সিলিন্ডার পেলেও মাকে তা দিতে পারেননি।
মৃত্যুর স্বজন মাইনুল বলেন, তাঁর চাচীর এত দিন জ্বর থাকলেও গতকাল সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। বেলা ২টার দিকে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে এলে সেখান থেকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করাতে বলা হয়। অক্সিজেন সিলিন্ডার চাইলে সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবহেলা, উদাসীনতা আর দুর্ব্যবহার করেছে। পাশাপাশি ওয়ার্ডার মাস্টারের দাবীকৃত ৫০০টাকা না দেওয়ায় চাচীর জন্য অক্সিজেন দিতে বিলম্ব হওয়ায় তিনি শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গেছেন।
রানু বেগমের ছেলে আল আমিন কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, আম্মাকে বাঁচাতে পারিনি। হাসপাতালে আনার পর তিন ঘণ্টা ধরে অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য পাগলের মতো হন্যে হয়ে ঘুরেছি। টাকা না দেওয়ার কারণে সময়মত অক্সিজেন পাইনি। হাসপাতালে সরকারি ট্রলিতে তোলার জন্য ট্রলি ম্যান ১৫০ টাকা দাবি করে। টাকা ছাড়া এখানে অক্সিজেন মেলে না। ওয়ার্ড মাস্টার এক সিলিন্ডারের জন্য ৫০০টাকা দাবী করেছে। ওই সময়ে ওই পরিমান টাকা আমাদের কাছে না থাকায় তাদের দিতে পারিনি। অক্সিজেনের অভাবে মা আমার ছটফট করতে করতে মা মারা গেছেন। সঠিক সময়ে অক্সিজেন আর চিকিৎসা পেলে আমার মা মারা যেতেন না। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
তবে টাকার চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে করোনা ওয়ার্ডের ওয়ার্ড মাস্টার মশিউর রহমান বলেন, আমি কোন রোগীর স্বজনকে গালিগালাজ করিনি এবং কোন ধরনের অর্থ দাবিও করিনি। এছাড়া অক্সিজেন দেওয়ার এখতিয়ার আমর না, দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সদের।
করোনা ওয়ার্ডের ইনচার্জ ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, করোনা ইউনিট থেকে অক্সিজেন দেওয়া হবে না, এমন হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি আমার জানা নেই। আসলে কী ঘটেছিল, আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। অভিযোগের সত্যা মিললে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক, ৪ আগস্ট ২০২১
2021-08-04

Related Keywords

Bengali ,Bangladesh General ,Bangladesh ,Rahman Shaheen ,Al Amin ,Ranu Begum ,Bengali Medical College Hospital ,College Hospital ,Shere Bengali Medical College Hospital ,Sword Master ,Ranu Begum For ,Being Ranu State ,Mom For ,Word Master Mr Rahman ,Word Master Ranu ,Ward Word Master Mr Baby ,பெங்காலி ,பங்களாதேஷ் ,அல் அமின் ,றானு பிச்சம் ,கல்லூரி மருத்துவமனை ,சொல் குரு ,அம்மா க்கு ,

© 2024 Vimarsana

comparemela.com © 2020. All Rights Reserved.