comparemela.com

Card image cap


বাড়ির উঠানজুড়ে লাল সামিয়ানায় ঘেরা। ভেতরে ভাড়া করে আনা চেয়ার, টেবিল ও ফ্যান। বাইরে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। সামিয়ানার ভেতরে এক কোনায় টেবিলে সাজানো রয়েছে রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্য বাটাভরা পান-সুপারিসহ টিস্যু ও মাস্ক। খাবারের তালিকায় ছিল মাংস-পোলাও, ডাল, ডিম, সালাদ, মিষ্টি ও কোমলপানীয়। সবকিছু মিলে আয়োজনটি দেখলে মনে হবে এলাকার কোনো প্রভাবশালীর মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান কিংবা স্বচ্ছল বা বিত্তবানদের জন্য ঈদ পরবর্তী কোনো আয়োজন। কিন্তু না, পুরো আয়োজনটিই ছিল অতিদরিদ্র, অসহায় ও প্রতিবন্ধীদের জন্য। বর্তমান সমাজে যারা কখনোই এ ধরণের বড় কোনো অনুষ্ঠনে সরাসরি অংশ নেওয়ার ‘যোগ্যতা’ রাখেন না, মুলত তাদের জন্যই ছিল বিরল এই আয়োজন। যেখানে অংশ নিয়েছিলেন এলাকার প্রায় ১৭০ জন হতদরিদ্র মানুষ।
ঈদের পরদিন গত বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) বিকেলে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ বাজারের পাশে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী যুবকের মাথায় হঠাৎ আসা চিন্তা থেকেই এমন বিরল আয়োজন করা হয়। মানবতার এমন আয়োজনটির নাম দেওয়া হয় ‘ঈদে কষ্টমানুষের পাশে’। অনুষ্ঠানে আসা অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ সমাজে পিছিয়েপড়া মানুষদের পরম মমতায় খাইয়েছেন তারা। এতে হাজারো খাটাখাটুনির পরও স্বস্তি পেয়েছেন মানবিক যুবকরা, তেমনি জীবনে প্রথম দাওয়াত দিয়ে আদর-যত্নে খাওয়ানোয় তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন সামাজের হতদরিদ্র ‘অসহায়’ মানুষগুলো।
অনুষ্ঠানে আগতদের অনেকেই জানান, জীবনে এর আগে কেউ তাদের এ ধরণের আয়োজনে দাওয়াত দেয়নি। রসনা বেগম নামের অতিদরিদ্র এক নারী অনুষ্ঠানে এসে খাওয়ার পর বলেন, ‘মোর জীবনে এমন করি কোনদিন খাঁওনি বাহে। কোনো অনুষ্ঠানোত কাঁয়ও দাওয়াত দেয়নি। সমাজের অনেক বড়লোক মানুষকে আইজ চোখে আঙুল দিয়া দেখাইলো এই যুবক ছেলেরা। আইজক্যা যারা এইভাবে দাওয়াত দিয়া আমাগো খাওয়াইল্যা আল্লায় তাদের আরো বড় করুক।’ বৈরাতী এলাকা থেকে আসা শুক্কর মিয়া বলেন, বিয়ার বাড়িৎ মুই মেলা খাছুং। কিন্তু কাঁয়ও এ্যানতোন (এভাবে) করি খাওয়ায় নাই। খুব শান্তি পানু বাহে।
স্বেচ্ছাসেবী আজাদ আলী বলেন, প্রতি ঈদে সবাই কোরবানি দেন। সেখান থেকে প্রথমে মাংস সংগ্রহ করি। পরে সবাই এগিয়ে এসে কেউ মাংস, ডাল, ডিম, মিষ্টি কোমলপানীয় দেন। এভাবে সবকিছু হয়ে যায়। এক কথায় ভালো কাজে আটকে থাকে না। এভাবে যদি সবাই এগিয়ে আসত, তাহলে দেশে কোনো সমস্যা থাকত না।
স্বেচ্ছাসেবী রেফাজ রাঙ্গা বলেন, এবারে তাৎক্ষণিক চিন্তা থেকে অল্প মানুষকে খাওয়ানো সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ হল না খেয়ে কেউ থাকবে না। সেই চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে ডেটাবেইস করা হবে। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে এসব অসহায় পরিবারকে সাহায্য করা আরো সহজ হবে বলে তিনি জানান।
আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা সাংবাদিক হায়দার আলী বাবু বলেন, প্রতি বছর কোরবানির ঈদ এলেই অতিদরিদ্র মানুষকে সাধ্যমতো অনেকেই মাংস দিয়ে দেন। কিন্তু ঈদের আমেজে বিত্তবান ব্যক্তিরা যেভাবে বাড়িতে রান্না-বান্না করে খান, তারা সেভাবে সুস্বাদু করে খেতে পান না। তাই সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের দাওয়াত দিয়ে চেয়ার, টেবিল, ফ্যান দিয়ে আদর-যত্নে অনেকটা বিয়ের বাড়ির মতো আয়োজন করে খাওয়ানো হয়েছে। এই আয়োজনে তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, প্রতিবছর এই আয়োজন অব্যাহত রাখা হবে।
এই রকম আরো খবর

Related Keywords

Lalmonirhat , Rangpur , Bangladesh , Jazad Ali , Haider Ali Babu , , For Eid , Prime Minister Sheikh , ழாள்மோனிர்த் , ரங்க்பூர் , பங்களாதேஷ் , அசாத் அலி , க்கு எய்ட் , ப்ரைம் அமைச்சர் ஷேக் ,

© 2024 Vimarsana

comparemela.com © 2020. All Rights Reserved.